ভারতে করোনা আক্রান্ত ৮০% রোগীর চিকিৎসা হয় সরকারি হাসপাতালে। বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল এই পরিষেবা দিলেও তার খরচ জোগাড় করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হয়ে পড়ে। দেখে নেওয়া যাক, Copvid-19 এর চিকিৎসায় কত অর্থ খরচ হতে পারে।
করোনা আক্রান্তের চিকিৎসার খরচ নির্ভর করে রোগীর শরীরে সংক্রমণের মাত্রার উপরে। তা ছাড়া, তিনি বয়সে প্রবীণ হলে এবং তাঁর কোনও পুরনো শারীরিক সমস্যা থাকলে তার জন্যও খরচ বাড়ে।
সরকারি হাসপাতালের হিসেব অনুযায়ী, সাধারণ করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটর-সহ জীবনদায়ী ব্যবস্থা ছাড়া প্রতিদিন খরচ পড়ে ২০,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা। অর্থাৎ ১৪ দিনের জন্য খরচ দাঁড়ায় ২,৮০,০০০ টাকা থেকে ৩,৫০,০০০ টাকা। সাধারণত তিন থেকে পাঁচ বার নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হলে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। কিন্তু অনেক সময়েই তা হয় না। যেমন সংগীতশিল্পী কণিকা কাপুরকে ৬ বার পরীক্ষার পরেও ফল মিলেছিল
আরও পড়ুন: বাড়ি ফিরতে পারবেন না করোনার চিকিৎসায় যুক্ত ডাক্তারবাবু ও নার্সরা, জানাল সরকার
সোয়্যাব বা ফ্লুইড টেস্টের খরচ অবশ্য ৪,৫০০ টাকায় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই পরীক্ষার কিটের দামই ৩,০০০। পরীক্ষায় কোনও ব্যক্তির নমুনা পজিটিভ ধরা পড়লে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি খরচে অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর পর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হলে করোনা আক্রান্তদের জন্য আলাদা ষৌচাগার রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। বয়স্ক রোগী যাঁদের একাধিক শারীরিক সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে, তাঁদের ঘরে অন্য কোনও রোগী রাখার নিয়ম নেই।
কেরালার বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন ভেন্টিলেটরের খরচ পড়ে ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা। সরকারি হাসপাতালে অবশ্য এই খরচ অনেকটাই কম। এ ছাড়া হাসপাতাল অনুযায়ী তারতম্য রয়েছে ঘরভাড়ায়। তবে বেসরকারি হাসপাতালে ন্যূনতম দৈনিক ঘরভাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন: ইচ্ছা করে চিকিৎসদের করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না, দাবি মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নদের
একশো শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতালে অন্তত ২০০ পিপিই কিট প্রয়োজন হয়। প্রতি চার ঘণ্টা অন্তর চিকিৎসক ও নার্সদের কিট পরিবর্তন আবশ্যিক। এক কোভিড হাসপাতালের নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট জানিয়েছেন, পিপিই কিটের প্রতিটির দাম ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে। রোগী বিশেষে ওষুধের দাম ধার্য হয়। অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভিট্রিয়োল ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক ওষুধের দাম প্রতিদিন ৫০০-১০০০ পড়ে রোগীপিছু। এর পরে রয়েছে রোগীর খাওয়াদাওয়ার খরচ।
কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা আশ্বাস দিয়েছেন, ‘কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইতে খরচ বাধা হবে না, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কারণে রোগীর চিকিৎসায় আমরা অকাতরে খরচ করছি। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরে বেশ কিছু বিদেশি রোগীও চিকিৎসার মান সম্পর্কে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।’
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এর জেরে কেরালা সরকারের কোষাগারে ভালোই টান পড়তে চলেছে।