গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশীতে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গ ভেঙে আটকে পড়েছিল ৪১ জন শ্রমিক। ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে থাকার পর অবশেষে উদ্ধার করা হয় শ্রমিকদের। প্রায় দুমাসেরও বেশি সময় থমকে থাকার পর আবার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা এখনও ভুলতে পারেননি শ্রমিকরা। কিন্তু, তার মধ্যেও কাজ শুরু হতেই আটকে থাকা শ্রমিকদের একজন আবার এই কাজে যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হিমালয়ের পেট থেকে ‘মুক্তি’ ৪১ শ্রমিকের, ১৭ দিন পরে উদ্ধার উত্তরকাশীর টানেল থেকে
এই কাজে যোগ দিতে মঙ্গলবার চারধাম প্রকল্পের সিল্কিয়ারা–বারকোট সুড়ঙ্গে পৌঁছেছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক মানিক তালুকদার। তিনিও ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন। কেন তিনি এই কাজে যোগ দিতে এসেছেন সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ভয়ে কাজ করা বন্ধ করে দেব।’আটকে পড়া শ্রমিকদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। যারা উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে কাজ করার জন্য বাড়ি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলেন।
গত ১২ নভেম্বর ধসের পরে একটি সরু পাইপের সাহায্যে সুড়ঙ্গে প্রয়োজনীয় খাবার, জল এবং অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছিল। উত্তরকাশী সুড়ঙ্গ বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের পর রাজ্যে পা রেখেই কর্মসংস্থানের দাবিতে সরব হয়েছিলেন মানিক তালুকদার। তিনি বলেছিলেন, ‘উত্তরাখণ্ডে কত কোম্পানি, কত কাজ। এখানে কোনও কাজই নেই। আমি ওখানে ৩৪ হাজার টাকা বেতন পাই। এখানে কেউ দেবে? ছেলে বিএ পাশ করে বসে আছে। সরকারি, বেসরকারি কোনও চাকরিই নেই। কাজ না করলে সংসার চালাব কী করে? দিদিকে বলব একটা কাজ দিন। বাইরে যেতে চাই না।’ কিন্তু কোনও কাজ না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই আবার সুড়ঙ্গের কাজেই ফিরে গেলেন মানিক বাবু।যদিও আরেকটি ধসের আশঙ্কা থেকে সরে আসেননি তিনি। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজে কী ঝুঁকি সে সম্পর্কে সচেতন।’ উল্লেখ্য, পরিবহণ মন্ত্রক গত সপ্তাহে কাজ পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সুড়ঙ্গে যে ৪১ জন শ্রমিক আটকে পড়েছিলেন তার মধ্যে মানিক বাবু ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন আরও দুজন। এরা হলেন হুগলির পুরশুড়ার হরিণাখালির জয়দেব প্রামাণিক এবং পুরশুড়ার শৌভিক পাখিরা। ২৮ নভেম্বর সকল শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। এরপরেই আটকে থাকা শ্রমিকদের ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দিয়েছিল উত্তরাখণ্ড সরকার।