দিনভর জায়গায় জায়গায় আন্দোলন বিক্ষোভের পর গতরাতে কাজে ফিরে গিয়েছেন ট্রাকচালকরা। তবে এর আগে দেশ জুড়ে যে আন্দোলন তাঁরা শুরু করেছিলেন, তাতে জ্বালানি সরবরাহের ওপর চাপ পড়তে শুরু করেছিল। বহু জায়গায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল পেট্রোল পাম্প। আতঙ্ক এবং আশঙ্কার জেরে বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইন লাগতে দেখা যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেককেই। আর এরই মাঝে জ্বালানির অভাবে ঘোড়ায় চড়েই রাস্তায় নেমে পড়েন এক জোমাটে ডেলিভারি পার্টনার। গতকাল এমনই দৃশ্য দেখা যায় হায়দরাবাদে। এই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। (আরও পড়ুন: পেনশনভোগীদের জন্য সুখবর, একলাফে ১৫% বাড়ানো হল ডিআর, মিলবে ৭ মাসের বকেয়া)
আরও পড়ুন: ৯০০ কর্মীর বেতন বন্ধ, ২০০০-কে 'জোর করে বদলি', বিস্ফোর অভিযোগ TCS-এর বিরুদ্ধে
ভাইরাল সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, জোমাটোর লোগো আঁকা লাল জ্যাকেট পরে থাকা এক যুবক ঘোড়ার পিঠে চেপে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর পিঠে খাবার বহন করার জোমাটোর হটব্যাগ। ভিডিয়োটি তোলা হয় হায়দরাবাদের চঞ্চলগুড়া অঞ্চলে ইম্পেরিয়ল হোটেলের বিপরীতে। এদিকে উৎসুক পথচারীদের দিকে হাত নাড়তেও দেখা যায় ঘোড়ার পিঠে চেপে থাকা সেই যুবককে। এই ঘটনার ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন এনডিটিভির সাংবাদিক উমা সুধীর। তিনি ভিডিয়োর ক্যাপশনে লেখেন, ‘হায়দরাবাদে জ্বালানি তেলের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় ডেলিভারি ঘোড়ার পিঠে চেপে গন্তব্যে যাচ্ছে। এই দৃশ্য ইম্পেরিয়াল হোটেলের বিপরীতে চঞ্চলগুড়ায়। হিট অ্যান্ড রান নিয়ে নতুন আইনের বিরোধিতায় ট্রাকচালকদের আন্দোলন চলছে। এর জেরে পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইন লাগছে। এরই ফল এই দৃশ্য।’
ভিডিয়োতে ঘোড়ার পিঠে চেপে থাকা যুবককে রাস্তার পাশের একজনের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায়। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, পেট্রোল পাম্পে তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই নাকি তিনি ঘোড়ায় চেপে কাজে বেরিয়েছেন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, একজন জোমাটোর ডেলিভারিম্যানকে জিজ্ঞেস করছেন যে তিনি ঘোড়ায় চেপে কেন যাচ্ছেন। জবাবে তিনি বলছেন, 'পেট্রোল পাইনি ভাই। তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অর্ডার পাওয়ার পর বেরিয়ে পড়েছিলাম। তবে পেট্রোল না পেয়ে এই দশা।' উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন শহরের মতো হায়দরাবাদের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পেও গতকাল লম্বা লাইন পড়েছিল গাড়ির। পাম্প ছাড়িয়ে লাইন রাস্তায় এসে নেমেছিল। তবে আজ থেকে পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ ট্রাক চালকরা ধর্মঘট তুলে নিয়েছেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠক করে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস। বৈঠকের পরপরই এই সংগঠনের পক্ষ থেকে বুধবার ট্রাকচালকদের কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। সরকারি সূত্রের খবর, দু'পক্ষের মধ্যে এই বৈঠক সফল হয়েছে। পাশাপাশি পরিবহণ সংগঠনকে জানানো হয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিতর্কিত আইনটি এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না। বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা জানান, আইনের ১০৬(২) ধারা নিয়ে কোনও রকম সংশয় থাকলে কেন্দ্রীয় সরকার তা খোলা মনে পর্যালোচনা করে দেখবে। উল্লেখ্য, দাবি করা হচ্ছে, এই আইন অনুযায়ী, ট্রাকচালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে তাঁর ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।