ফের একবার ডিএ আন্দোলনকারীদের নিয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিধাননগর পুরসভার একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে গতকাল মন্ত্রী মন্তব্য করেন, 'না পোষালে রাজ্য সরকারি কর্মীরা যেন চাকরি ছেড়ে কেন্দ্রের চাকরি করেন।' উল্লেখ্য, এর আগেও ডিএ আন্দোলন নিয়ে সরাকরি কর্মীদের 'হুঁশিয়ারি' দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম।
1/7উল্লেখ্য, মাধ্যমিক পরীক্ষার মাঝেই গতকাল দুই ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত পেন-ডাউন রাখেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। এই আবহে ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দেন ফিরহাদ। মঙ্গলবার বিধাননগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ‘আশ্রয় প্রকল্প’-এ বাড়ি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেন, 'ডিএ নিয়ে এখন অনেক কথা হচ্ছে। মানুষের কাছে কোনটা অগ্রাধিকার হওয়া উচিত? যারা অবহেলিত এবং বঞ্চিত, তাদের মুখে ভাত তুলে দেওয়া? নাকি যারা অনেক পাচ্ছে তাদের আরও বেশি পাইয়ে দেওয়া?'
2/7এদিকে ফিরহাদ আরও বলেন, 'যারা অনেক পায়, তাদের আরও পাইয়ে দেওয়া আমার কাছে পাপ বলে মনে হয়। আমি বলছি, না পোষায় ছেড়ে দিন না। কেন্দ্রীয় সরকার যখন অনেক টাকা দিচ্ছে, সেখানে গিয়ে কাজে যোগ দিন। আমি কোনও বহুজাতিক সংস্থার ক্লার্ক নই। বহুজাতিক সংস্থার কোনও বাবু নই, আধিকারিক নই। ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আমার মাইনে হয়, আমি মানুষের সেবা করি। সেই ব্রতটা সবার আগে দরকার।'
3/7বকেয়া মহার্ঘভাতা তথা ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারে এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মচারীরা। পাশাপাশি চলছে অনশন। তার মেয়াদ দুই সপ্তাহ পার করে গিয়েছে। ১০ মার্চ ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এর আগে ২০ এবং ২১ ফেব্রুয়ারি গোটা দিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলকারীরা। তবে এত কিছু করেও হকের টাকা মেলেনি। সরকার এতটুকু টলেনি।
4/7আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য, এই পে কমিশনের প্রথম থেকেই সরকার ৬ শতাংশ ডিএ বলে ঘোষণা করে আসছে, সেটা মিথ্যা। সরকার আমাদের এইচআর-এর টাকা ১৫ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমিয়ে ১২ করেছে। সেটাই ডিএ বলে চালাচ্ছে। ওটা আসলে ডিএ নয়, আমাদের এইচআর-এর টাকা কেটে নিয়ে ডিএ বলছে। আসলে আমরা কোনও ডিএ-এই পাচ্ছিলাম না। এখন ৩ শতাংশ ঘোষণা করল। আমরা ৩৯ শতাংশ ডিএ চাই।
5/7এই আবহে বকেয়া ডিএ না মেটানো হলে ফের একবার পঞ্চায়েত ভোটে অংশ না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। সরকারি কর্মীরা ঠিক করেছেন, নির্বাচন কমিশন থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য ভোটকর্মীদের যে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, সেটায় কোনও তথ্য দেবেন না তাঁরা। এর আগেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন আন্দোলকারীরা।
6/7এদিকে ৫ মার্চ, রবিবার, ময়দান এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন কররা ডাক দিয়েছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। সেই সঙ্গে আন্দোলনরত কর্মপ্রার্থী এবং বিভিন্ন ছাত্র-যুব সংগঠনকেও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। এই আবহে সেদিন ময়দানে বড় জমায়েত করা হবে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
7/7উল্লেখ্য, আগামী ১৫ মার্চ ফের ডিএ মামলার শুনানি হতে চলেছে সুপ্রিম কোর্টে। সেদিনই চূড়ান্ত শুনানি হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। উল্লেখ্য, গত বছর ২০ মে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। সেই রায় কার্যকর করার একেবারে শেষলগ্নে হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য সরকার। যা ২২ সেপ্টেম্বর খারিজ করে দিয়েছিল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। বহাল রাখা হয়েছিল ২০ মে'র রায়।