শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৬ রান। হাতে ছিল ৫ উইকেট। জয়ের রাস্তা ছিল খুবই সহজ। কিন্তু সেখান থেকে ম্যাচটিকে রুদ্ধশ্বাস পর্যায়ে নিয়ে গেলেন আফগানিস্তানের করিম জানাত। হ্যাটট্রিক করে বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিলেন আফগান তারকা। কোনও মতে নাটকের যবনিকা পতন করে ২ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ।
ম্যাচের শেষ ওভারের প্রথম বলেই করিমকে চার হাঁকান মেহেদি হাসান মিরাজ। এর পর বাংলাদেশের ৫ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২ রানের। সেখান থেকে পরপর তিন বলে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা। মেহেদি হাসান, তাসকিন আহমেদ এবং নাসুম আহমেদকে ফেরান করিম। হ্যাটট্রিক করে ম্য়াচের রং বদলে দেন আফগানিস্তানের তারকা বোলার। পঞ্চম বলে অবশ্য কোনও রকম চাপ না রেখে চার মেরে ম্যাচ জিতিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম।
করিমের এই হ্যাটট্রিক বাংলাদেশের সিলেটে পুরুষদের টি-টোয়েন্টিতে ৫০তম হ্যাটট্রিক। আর আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করলেন করিম। এর আগে ২০১৯ সালে রশিদ খান আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ফ্লাওয়ার জামানা শেষ, শিরোপা জেতাতে LSG-তে কোচ হয়ে আসছেন অজি প্রাক্তনী
মোদ্দা কথা, শুক্রবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন আফগান পেসার করিম জানাত। ক্ষণিকের জন্য মনে হচ্ছিল ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বেঙ্গালুরুর সেই ম্যাচের স্মৃতিই বোধহয় ফিরে আসতে চলেছে। সেই ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছিল। সে বারও ভারতের বিরুদ্ধে শেষ তিন বলে ২ রান দরকার ছিল। সেখান থেকে পরপর তিন উইকেট হারিয়ে বসে ম্যাচ হাতছাড়া করেছিল টাইগাররা। কিন্তু এদিন চূড়ান্ত নাটকীয়তার পর বাংলাদেশই ম্যাচটা জেতে ২ উইকেটে। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে গেল ১-০-তে।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল আফগানিস্তান। তারা নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান করে। মূলত মহম্মদ নবির ৪০ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের হাত ধরে ১৫০ রানের গণ্ডি টপকায় আফগানিস্তান। এ ছাড়া ১৮ বলে ৩৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ২৩ বলে ২৩ করেছেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। ওপেন করতে নেমে রহমানুল্লাহ গুরবাজ করেন ১১ বলে ১৬ রান। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাননি। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নেন শাকিব আল হাসান।
আরও পড়ুন: অনবদ্য কাভেরাপ্পা, জাতীয় দলে ব্রাত্যদের দৌলতে ভালো জায়গায় দক্ষিণাঞ্চল
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে-তে ২ উইকেট পড়েছিল। এর পর সপ্তম ওভারে দলের ৩৯ রানের মাথায় পড়ে বাংলাদেশের তৃতীয় উইকেট। এর পর বৃষ্টিতে প্রায় ২০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। খেলা শুরু হলে শাকিব আল হাসানের ৩টি বাউন্ডারি ঝিমিয়ে পড়া গ্যালারিকে যেন নতুন করে জাগিয়ে তোলে। তবে দলের ৬৪ রানের মাথায় আউট হন শাকিব আল হাসানও। তিনি করেন ১৭ বলে মাত্র ১৯ রান। স্বভাবতই কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু তৌহিদ হৃদয় এবং শামিম হোসেন মিলে দলের হাল ধরেন।
বিশেষ করে ১৩তম ওভারে ওমরজাইয়কে পিটিয়ে হৃদয় এবং শামিম মিলে ২২ রান নেন। এই ওভারেই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। এই দুই তারকা মিলে পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের পার্টনারশিপ করে। ৩২ বলে ৪৭ করেন হৃদয়। আর শামিম করেন ২৪ বলে ৩৩ রান। তাঁরাই বাংলাদেশের জয় নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছিলেন। তবে শেষ ওভারের নাটক জমিয়ে দেন করিম। শেষ পর্যন্ত রোমহর্ষক ম্যাচ জিতে স্বস্তি পায় টাইগাররা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।