ডার্বি জয়ের পর মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাস যেন চার গুণ বেড়ে গিয়েছে। যদিও ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে বিরতির আগেই ৩-০ এগিয়ে থাকার পরেও, দ্বিতীয়ার্ধে দল রক্ষণাত্মক খেলায় বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন কোচ আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাস। তবে নিঃসন্দেহে বাকি ম্যাচগুলির জন্য বড় অক্সিজেন পেয়ে গিয়েছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। তাদের সামনে বুধবার কেরালা ব্লাস্টার্স। তাও অ্যাওয়ে ম্যাচে। তবু ফুটছেন দিমিত্রি পেত্রাতোসরা।
ঘরের মাঠে কেরালা ব্লাস্টার্স খেলতে নামলেই জহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম যেন সর্ষে খেতে পরিণত হয়। শয়ে শয়ে সমর্থক হলুদ জার্সি পরে ব্লাস্টার্সের হয়ে গলা ফাটান। প্রতিপক্ষ দল এখানেই যেন কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। তবে হাবাস চান, এই পরিবেশকেই কাজে লাগাক তাঁর দলের ফুটবলাররা।
মঙ্গলবার কোচি উড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের বাগানের স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘কোচির পরিবেশে, সমর্থকদের চিৎকারে আমাদের ছেলেদের উজ্জীবিত হতে হবে। মানসিকতায় বদল আনতে হবে। এত দর্শকের মাঝে খেলা তো ভালো। গ্যালারিতে এক হাজার লোক থাকার চেয়ে ভরা গ্যালারির সামনে খেলতে বেশি ভালো লাগে। আমরা পেশাদার। আমাদের এ ভাবেই ব্যাপারটা দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: এই প্রথম নয়, ক্লেটন আগেও পেনাল্টি মিস করেছে- বিরক্তি কি গোপন করতে পারলেন না কুয়াদ্রাত?
রবিবার ডার্বি খেলার তিন দিনের মধ্যেই বুধবার কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে হচ্ছে মোহনবাগানকে। মাঝে ২দিনের ব্যবধান। দলের ফুটবলাররা ডার্বির মতো হাইপ্রোফাইল ম্যাচ খেলার পর, তিন দিনের মধ্যে ফের কেরালার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে। ফুটবলারদের ক্লান্তি না সমস্যা তৈরি করে। এটাই চিন্তায় রেখেছে হাবাসকে। ফুটবলাররা তরতাজা ভাবে খেলতে না নামতে পারলে, অ্যাওয়ে ম্যাচে তিন পয়েন্ট পাওয়াটা বেশ কঠিন। যে কারণে হাবাস ক্ষোভ উগরে বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, ৪৮ ঘন্টা পরেই কী ভাবে আরও একটি ম্যাচ খেলা সম্ভব। এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন, কিন্তু আমরা পেশাদার। তবে নিয়ম সবার জন্য এক হওয়া দরকার।’
আরও পড়ুন: বিরতির পর ছেলেরা রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে- ডার্বি জিতে একে ওঠার পরেও রেগে লাল হাবাস
কেরালা অবশ্য শেষ পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হেরেছে। তবে নিজেদের ঘরের মাঠে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে যে ভাবে ৮১ মিনিট পর্যন্ত ১-২-এ পিছিয়ে থাকার পরেও, ৪-২ ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে কেরালা, তাতে তাদের সমীহ না করে উপায় নেই। হাবাস যে কারণে দাবি করেছেন, ‘তীব্রতার দিক থেকে এই ম্যাচটা ডার্বির চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। প্রতিপক্ষকে ঠিক মতো বিশ্লেষণ করা খুব জরুরি। ওখানকার পরিবেশ কেমন হবে, প্রতিপক্ষ শিবির থেকে কোন কোন অস্ত্র ধেয়ে আসতে পারে, আমরা জানি। কিন্তু আমাদের নিজেদের নিয়ে ভাবা বেশি জরুরি। বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে খেলা দরকার এই ম্যাচটা। কী ভাবে, সেটাই ঠিক করতে হবে আমাদের।’
নিজের দলের যথেষ্ট প্রস্তুতির অভাব, প্রতিপক্ষ শক্তিশালী, তার ওপর ঘরের মাঠে খেলছে। তা হলে কি বুধবার ড্র করলেই যথেষ্ট? এই প্রশ্ন শুনেই খেপে যান হাবাস। বলেন, ‘কোনও ম্যাচেই ড্র বা হার নিয়ে ভাবি না আমি। সব ম্যাচেই তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্যই মাঠে দল নামাই। কেরালার বিরুদ্ধেও জেতার জন্যই আমার দল নামবে। এখন আমাদের সব ম্যাচেই জিততে হবে। তা হলে আর কোনও জটিল অঙ্কের হিসেব কষতে হবে না।’
দলের অস্ট্রেলীয় ডিফেন্ডার ব্রেন্ডন হ্যামিল এখনও চিকিৎসাধীন এবং তাঁকে মাঠে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। তবে কেরালা ম্যাচে হ্যামিলের খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। হাবাস বলেওছেন, ‘হ্যামিলকে এখনও সারিয়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। খেলোয়াড়দের প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা পরখ করে ম্যাচের আগে প্রথম এগারো বাছতে হবে আমাদের। তার আগে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এই পরিস্থিতিতে রোটেশনে দল বাছা উচিত। দেখা যাক, কে কেমন থাকে। তার ওপর নির্ভর করছে প্রথম এগারো কী হবে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।