Kerala Blasters FC vs Mumbai City FC-হঠাৎ করেই নিজের মাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট লিখলেন কেরালা ব্লাস্টার্সের বাঙালি ফুটবলার প্রবীর দাস। আইএসএলে কেরালা ব্লাস্টার্স বনাম মুম্বই সিটি ম্যাচের পরেই এমনটা করেছেন তিনি। অনেকেই বলছে ম্যাচ হারা জন্য এমনটা লিখেছেন তিনি, আবার অনেকেই বলেছেন না ম্যাচে ধাক্কা ধাক্কি হয়েছিল, সেখানেই আঘাত পেয়েছিলেন প্রবীর। সে কারণেই তিনি মাঠে ছাড়ার সময়ে কাঁদছিলেন। এবার সকলকে জবাব দিলেন প্রবীর দাস। তিনি লিখলেন আঘাত পেয়েই তিনি কেঁদে ছিলেন, তবে সেই আঘাত শরীরে পাননি তিনি। প্রবীর মনে আঘাত পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে মনের যন্ত্রনার কথা লিখলেন প্রবীর। আসলে ম্যাচ চলাকালীন তাঁর মাকে অসম্মান করা হয়েছিল বলেই তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন।
সেই সময়েই প্রতিপক্ষ ফুটবলারের হাতে আক্রান্ত হন চোখের জলে মাঠ ছাড়েন তিনি। এর পরে প্রবীর মুখ খুললেন। তিনি জানিয়েছেন তাঁর মাকে হেনস্থা করা হয়েছে। প্রবীরের অভিযোগ, ম্যাচ হেরে যাওয়ায় নয়, মায়ের হেনস্থার জন্যই কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। মুম্বইয়ের মাঠে ১-২ গোলে হেরে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় দেখা যায়, কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়ছিলেন প্রবীর দাস। সেই সময় দেখে মনে হয়েছিল, দল হেরে যাওয়ায় ও তিনি আক্রান্ত হওয়ার জন্য কেঁদে ফেলেছেন প্রবীর। পরে আসল কারণ জানান প্রবীর দাস। ইনস্টাগ্রামে বাঙালি ফুটবলার লেখেন, ‘খেলায় হার-জিত থাকবেই। কিন্তু প্রত্যেকের ক্রীড়াসুলভ মানসিকতা রাখা দরকার। মাঠে মতানৈক্য হতেই পারে। কিন্তু সব কিছুর একটা সীমা থাকা দরকার। আমার মাকে হেনস্থা করা হয়েছে। মায়ের তো কোনও দোষ ছিল না।’
তাঁর ফুটবলার হয়ে ওঠার নেপথ্যে মায়ের ভূমিকার কথাও লিখেছেন প্রবীর। তিনি লেখেন, ‘আমি এমন পরিবেশ থেকে উঠে এসেছি যেখানে প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হয়। আমার স্বপ্ন পূরণে জন্য মা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। সেই সব ত্যাগ আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না। তাই আমি হেরে যাওয়ায় কাঁদিনি। মায়ের অসম্মান হওয়ায় কেঁদেছি।’
অবশ্য সেই সঙ্গে প্রবীর জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর কান্নাকে কেউ যেন তাঁর দুর্বলতা না ভাবে। তিনি লেখেন, ‘আমি দুর্বল নই। কোনও দুর্বলতা থেকে কাঁদিনি। মায়ের প্রতি ভালবাসা আমার চোখে জল এনে দিয়েছিল। মাঠে যা হল তাতে অনেকের প্রতি আমার সম্মান নষ্ট হয়ে গেল।’ কে বা কারা তাঁর মাকে হেনস্থা করেছেন তাঁদের নাম বলেননি প্রবীর। তবে তাঁর কথা থেকে স্পষ্ট যে মুম্বই ম্যাচে এমন কিছু হয়েছে, যা মেনে নিতে পারেননি বাঙালি ফুটবলার।
প্রবীর নিজের পোস্টে লেখেন, ‘ফুটবল খেলায় জয়-পরাজয় অবশ্যম্ভাবী, কিন্তু সত্যিকারের ক্রীড়াঙ্গনের সারমর্ম অবশ্যই প্রাধান্য পাবে। মাঠে মতপার্থক্য সাধারণ বিষয়, কিন্তু সেখানে একটি সীমানা আছে যা কখনই অতিক্রম করা উচিত নয়। আজ, আমার মা, যিনি সময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আজ অযৌক্তিক ভাবে নির্যাতনের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন। আমি আমার মায়ের দ্বারা গৃহীত স্থিতিস্থাপকতা এবং অগণিত ত্যাগের দ্বারা চিহ্নিত একটি পটভূমি থেকে অভিষিক্ত, যা আমাকে জাতীয় মঞ্চে আমার স্বপ্নকে অনুসরণ করতে দেয়। আমার প্রিয়জনদের দ্বারা করা এই ত্যাগগুলি পরম শ্রদ্ধার যোগ্য। প্রতিকূল ফলাফল সত্ত্বেও, আমার কান্না পরাজয়ের নয়, যন্ত্রণার ছিল, আমার মাকে অসম্মান করার জন্য।’
প্রবীর নিজের পোস্টে আরও লেখেন, ‘আমি সহজে প্রতিকূলতার কাছে নতি স্বীকার করার মতো নই। আমরা শিখব, মানিয়ে নেব এবং চাপ দিন। তবুও, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে আমার চোখের জল আমার মায়ের প্রতি ভালবাসার জন্য পড়েছিল, এটা আমার দুর্বলতা নয়। আমার প্রতিপক্ষের কাছে, আমি আপনাকে সেই মূল্যবোধগুলিকে চিনতে অনুরোধ করছি যা আমাদের আবদ্ধ করে - আমাদের বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আমাদের আত্মীয়দের প্রতি শ্রদ্ধা। এই ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য আপনি পয়েন্ট অর্জন করতে পারে, কিন্তু তারা আপনাকে আমার সম্মান মূল্য। অন্যকে ছোট করে সান্ত্বনা খুঁজে পাওয়া যদি আপনাকে শান্তি দেয়, তাই হোক।’ এরপরে তিনি লেখেন, ‘জীবনে, স্বপ্ন লালন করার জন্য পরিবারগুলি যে ত্যাগ স্বীকার করে তা সবাই বোঝে না। বিশেষাধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণকারীদের জন্য, অন্যদের সংগ্রাম প্রায়ই অকল্পনীয় থেকে যায়। আসুন মনে রাখি, প্রতিটি স্বপ্নের পিছনে একটি পরিবার দাঁড়িয়ে আছে যেটি তার নিজের বিসর্জন দিয়েছে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।