টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর, পরপর দুই ম্যাচে হার। আইএসএলে বড় ধাক্কা খেয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য ছটফট করছেন জুয়ান ফেরান্দোর ছেলেরা। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) এই বছরের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। প্রতিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্স। ১১ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা কেরালাও ভালো ছন্দে রয়েছে। তারা শেষ ম্যাচে মুম্বই সিটিকে হারিয়েছে। এই মুম্বইয়ের কাছে আবার হারতে হয়েছিল মোহনবাগানকে। তাই এদিনের লড়াইটাও কিন্তু বাগানের কাছে মোটেও সোজা হবে না।
এর মধ্যে আবার চোট-আঘাতে জর্জরিত হয়ে রয়েছে মোহনবাগান শিবির। আশিক কুরুনিয়ান, আনোয়ার আলিদের চোট তো আগে থেকেই ছিল। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সাহাল আব্দুল সামাদও সম্প্রতি চোট পেয়েছেন। অনিরুদ্ধ থাপা, মনবীর সিং ও দিমিত্রি পেত্রাতোস চোট সারিয়ে সদ্য মাঠে ফিরেছেন। গত ম্যাচে আবার অস্ট্রেলীয় স্টপার ব্রেন্ডন হ্যামিলও হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় পড়েছেন। চোট রয়েছে গ্লেন মার্টিন্সেরও। তবু ছাড়া দ্বিতীয় ভাবনা নেই ফেরান্দোর।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে দলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দল এখন খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখন নিজের কথা না ভেবে দলের কথা ভাবতে হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও কী করে একটা ভালো দল গড়া যায়, সেই নিয়ে ভাবছি। কারা এই ম্যাচ খেলার জন্য তৈরি ও সুস্থ, সেটাই দেখছি। মোদ্দা ব্যাপার হল, কাল তিন পয়েন্ট পেতে হবে। দলের উপর কতটা চাপ রয়েছে, তা নিয়ে ভাবছি না।’
মুম্বইয়ে তাঁর দলের একসঙ্গে তিন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন এই ম্যাচে মাঠে ফিরছেন। সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, ‘দলের অবস্থা একই রকম। শুধু আশিস রাই এবং হেক্টর ইউস্তে সাসপেনশন কাটিয়ে দলে ফিরছে। তবে চোট-আঘাতের অবস্থা একই রকম। ব্রেন্ডন হ্যামিলের চোট। গত ম্যাচে ওর হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যা হয়েছে। ও খেলতে পারবে না। সাহাল আর গ্লেনেরও চোট রয়েছে। ওদেরও এখন মাঠে নামা কঠিন।’
গত দুই ম্যাচে জিতে আসা কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে যে এই ম্যাচ বেশ কঠিন হতে চলেছে, তা স্বীকার করে নিয়ে স্প্যানিশ কোচ। তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ‘শুধু এই ম্যাচ নয়, সব ম্যাচই কঠিন। তবে এই পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষের চেয়ে নিজেদের দল নিয়েই বেশি ভাবছি। কেরালা খুবই ভালো পারফরম্যান্স করছে। মনস্তাত্বিক ভাবে ওরা অবশ্যই এগিয়ে রয়েছে। কারণ, ওরা শেষ দুই ম্যাচই জিতেছে। তবে আমার কাছে আমার দলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দলকে পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত করাই বেশি জরুরি। প্রতিপক্ষ তো আমাদের হাতে নেই। আমার দলই আমার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই নিজেদের নিয়ে বেশি ভাবাই ভালো।’
গত ম্যাচে এফসি গোয়ার কাছে চার গোল খেয়েছে বাগান। ফেরান্দো অবশ্য বলছেন, ‘জেতার উপরই বেশি জোর দিতে চাই আমরা। এক গোল খেলে আমাদের দু’গোল করতে হবে, বা দু’গোল খেলে তিন গোল করতে হবে, তা তো জানাই। আমরা মাঠে নামি জেতার জন্য। সে জন্য গোল দরকার। আক্রমণের শেষ পর্বে জায়গা তৈরি করা, গোলের সুযোগ তৈরি করা, এগুলোই বেশি জরুরি।’
পাশাপাশি তিনি যোগ করেছেন, ‘আক্রমণের পাশাপাশি রক্ষণের দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন। কিন্তু যদি শুধু রক্ষণের দিকেই নজর থাকে, তা হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ, গোল খেয়ে গেলে পুরো পরিকল্পনা বদলাতে হয়। আমরা গোল খাচ্ছি, এটা ঠিকই। কিন্তু গোল খাচ্ছি, যখন ৯-১০জন হয়ে যাচ্ছি, পেনাল্টি থেকে বা ছোট ভুলের জন্য। এগুলো সবই ফুটবলের অঙ্গ। কিন্তু আমাদের একই ভাবে খেলে যেতে হবে, পরিশ্রম করে যেতে হবে, জিততে হবে।’
এদিনের ম্যাচের পর আর জানুয়ারিতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের খেলা নেই। আবার ফেব্রুয়ারিতে ম্যাচ রয়েছে। তবে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কলিঙ্গ সুপার কাপে অংশ নেবে বাগান। সেই টুর্নামেন্টের পর ফেব্রুয়ারিতে আইএসএলের ম্যাচ। তাই আপাতত নিজেদের ঘরের মাঠে জয় দিয়েই বছরটা শেষ করতে চায় ফেরান্দো ব্রিগেড, যাতে তারা পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে শক্তিশালী ভাবে ফের শুরু করতে পারে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।