শুভব্রত মুখার্জি
করোনাভাইরাস প্রকোপের শুরুর পর প্রথম আইপিএলের আসর ভারতে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়েই প্রতিযোগিতাকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ফলে ২০২১ সালে ১৪ তম সংস্করণ আয়োজনের ক্ষেত্রে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) একটি ব্যাপারে যত্নশীল হয়েছিল যাতে এবারের প্রতিযোগিতা যে কোন মূল্যে দেশের মাটিতে আয়োজন করা যায়। তা করতে গিয়ে মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি, পঞ্জাবে প্রায় চার মাস ধরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনের মতো বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই ঘোষণা করা হয়েছে এবারের প্রতিযোগিতার সূচি এবং ভেন্যু। এবারের সূচি ঘোষণার সময় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, রাজস্থান রয়্যালস এবং পঞ্জাব কিংসের ঘরের মা যেহেতু ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়নি, তাই খেয়াল রাখা হয়েছিল সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির খেলা এমন ভেন্যুতে দেওয়া হবে, যাতে ব্র্যান্ড অ্যাক্টিভেশনে কোনও দল আলাদা করে সুবিধা না পায়।
এবার বিসিসিআইয়ের আইপিএলের এই ভেন্যু নির্বাচন নিয়ে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কেউ সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র থেকে বিসিসিআইয়ের উদ্দেশে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। একজন প্রশ্ন তুলেছেন, দর্শক যখন থাকছেন না, তখন স্টেডিয়ামে কেন দলগুলি ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ পাবে না?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক প্রশ্ন তুলেছেন, 'দিল্লির ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পৃথ্বী শ, আজিঙ্কা রাহানে, শ্রেয়স আইয়ার রয়েছেন, যারা মুম্বইয়ের ক্রিকেটার। আর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দিল্লি তাদের প্রথম তিন ম্যাচ খেলবে। পঞ্জাবের দলে কেএল রাহুল, মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং কোচ অনিল কুম্বলে রয়েছেন যাঁরা বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। আর এদিকে বেঙ্গালুরুরতে পাঁচটি ম্যাচ খেলবে পঞ্জাবের। তাঁরা কি চিন্নাস্বামীতে পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত নন? তাহলে কি তাঁদের ঘরোয়া পরিবেশের সুবিধা দেওয়া হল না ?'
এছাড়াও সূচি নিয়ে অন্য বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। দেশের ছ'টি ভেন্যুতে ম্যাচ হলে সুরক্ষার মানদণ্ড, অপারেশানাল সমস্যা, লজিস্টিকসের সমস্যা বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও মহারাষ্ট্র সরকার ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরেই সূচি চূড়ান্ত করা হয়। প্রথমে ঠিক ছিল, গ্রুপ লিগের সমস্ত ম্যাচ মুম্বই এবং পুণেতে আয়োজন করা হতে পারে। যদিও পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্ত পালটানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবার দলগুলি একটি হোটেলে থেকে একটি বাসে করেই মাঠে যেত। একাংশের বক্তব্য, বাস ড্রাইভার থেকে হোটেল স্টাফ - সকলেই জৈব সুরক্ষা বলয়ের অংশ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছ'টি ভেন্যুতে ম্যাচ হওয়ার কারণে বাবল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। লিগ পর্যায়ে এমনভাবে সূচি করা হয়েছে যাতে চারটি ভেন্যুতে প্রতিটি দলকে খেলতে হবে অর্থাৎ চারবার সফর করতে হবে। যা সমস্যার। কারণ বারবার আলাদা আলাদা এয়ারপোর্ট, হোটেল, বাস ব্যবহার করার ফলে সংক্রমনের সংখ্যা প্রবল ভাবে বাড়ছে বলে মত ওই মহলের।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।