ওয়াংখেড়েতে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ১৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১০৫ রান করেছিল পঞ্জাব কিংস। আর বাকি ছয় ওভারে উঠল ১০৯ রান। নির্দিষ্ট ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ২১৪ রান করল পঞ্জাব কিংস। শেষ ৬ ওভারে সাইক্লোন বইয়ে দিয়ে স্যাম কারানরা গড়ে ফেললেন নজির।
পঞ্জাব কিংস এ দিন নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভেঙে দিল। আইপিএল ইনিংসের শেষ ছয় ওভারে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়ল তারা। পঞ্জাবের টিম এর আগে ২০১৪ সালের ৭ মে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৯২ রান করেছিল। যেটা এত দিন শেষ ৬ ওভারে তাদের করা সর্বোচ্চ রান ছিল। সেই রেকর্ডই শনিবার ভেঙে করল নয়া নজির। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শেষ ৬ ওভারে হল ১০৯ রান। ১৬তম ওভারে অর্জুন তেন্ডুলকর ৩১ রান দিলেন। ১৮তম ওভারে ক্যামেরন গ্রিন দিলেন ২৫ রান। এই দুই ওভারেই হয় ৫৬ রান। বাকি চার ওভারে হয় ৫৩ রান।
সামগ্রিক ভাবে এই রেকর্ডটি রয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। ২০১৬ সালে আইপিএলের তৎকালীন টিম গুজরাট লায়ন্সের বিরুদ্ধে শেষ ৬ ওভারে ১২৬ রান করেছিল আরসিবি। সেই রেকর্ড এখনও কেউ ভাঙতে পারেনি।
আরও পড়ুন: সচিনের নামে গর্জে উঠল ওয়াংখেড়ে, দু’দিন আগেই পালিত হল তেন্ডুলকরের ৫০তম জন্মদিন
শেষ ওভারে আর্শদীপ সিংয়ের আগুনে বোলিং। যার জেরে ঝলসে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। আর আর্শের জন্যই শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে ১৩ রানে হারতে হল মুম্বইকে। পর পর দু’বলে পঞ্জাবের বাঁ-হাতি জোরে বোলার আউট করলেন তিলক বর্মা এবং নেহাল ওয়াধেরাকে। এই দুই বলেই মিডল স্টাম্প ভেঙে দু'টুকরো হয়ে গেল। আর এই দু’বলই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত করে দিল। প্রথমে ব্যাট করে পঞ্জাব তোলে ৮ উইকেটে ২১৪ রান। জবাবে মুম্বই করল ৬ উইকেটে ২০১।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পঞ্জাব শুরুতে ৮৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল। হাল ধরেন হরপ্রীত সিংহ। তাঁকে ২২ গজে সঙ্গ দেন অধিনায়ক স্যাম কারান। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে তাঁরা তোলেন ৯২ রান। হরপ্রীত করেন ২৮ বলে ৪১ রান। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৪টি চার এবং ২টি ছয়ে। কারানের ইনিংস থামল ৫৫ রানে (২৯ বল)। ৫টি চার এবং ৪টি ছক্কা মারেন পঞ্জাব অধিনায়ক। কারানই মূলত দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন চাপের মুখ থেকে। শেষ দিকে পঞ্জাবের ইনিংস টানলেন জিতেশ শর্মা। ৭ বলে ২৫ রান করেন তিনি। মারলেন ৪টি বিশাল ছক্কা। জিতেশের দাপটেই ২০০ রানের গন্ডি টপকাল পঞ্জাব। মুম্বইয়ের ক্যামেরন গ্রিন ওএবং পীযূষ চাওয়া নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। চোট সারিয়ে দলে ফিরে জোফ্রা আর্চার নিয়েছেন ১ উইকেট। এ ছাড়া অর্জুন তেন্ডলকর, জেসন বেহরেনডর্ফ নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
আরও পড়ুন… অনুশীলনের কোনও বিকল্প নেই- গুজরাট টাইটানসকে জিতিয়ে কী বললেন ম্যাচের নায়ক মোহিত শর্মা?
জয়ের জন্য ২১৫ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ইশান কিষাণের (১) উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় মুম্বই। ইশান ব্যর্থ হলেও লড়াই করলেন রোহিত। তাঁর ২৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস পঞ্জাবের উপর পাল্টা চাপ তৈরি করলেও, তা মুম্বইকে জেতানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। মুম্বই অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল ৪টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ওভার বাউন্ডারি। তিন নম্বরে নামা ক্যামেরন গ্রিন এবং চার নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদব আগ্রাসী ব্যাটিং করলেন। আইপিএলের শুরুর দিকে ছন্দে না থাকা সূর্যকুমারকে আবার চেনা মেজাজে দেখা যাচ্ছে। গ্রিনের ব্যাট থেকে এল ৪৩ বলে ৬৭ রানের ইনিংস। মারলেন ৬টি চার এবং ৩টি ছয়। সূর্যকুমারের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তাঁর ৩৬ বলে ৭৫ রানের দাপুটে জুটি পাল্টা চাপ তৈরি করে পঞ্জাবের উপর। কমিয়ে আনে ওভার প্রতি রান তোলার লক্ষ্যমাত্রা। সূর্যকুমার অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন ২৩ বলে। শেষ পর্যন্ত তাঁর ব্যাট থেকে এল ২৬ বলে ৫৭ রানের ইনিংস। নিজের ইনিংসটি সাজালেন ৭টি চার এবং ৩টি ছয় দিয়ে। গ্রিন আউট হওয়ার পর নামা টিম ডেভিডকেও দেখা গেল আগ্রাসী মেজাজে। তাতে অবশ্য লাভ হল না। ডেভিড ১৩ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকলেও উইকেটের অন্য প্রান্তে সতীর্থদের সাহায্য পেলেন না। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। একেবারেই কঠিন লক্ষ্য ছিল না। আর্শদীপ সেই ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন। ১৩ রানে নিজেদের ঘরের মাঠে হেরে বসে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।