মহেন্দ্র সিং ধোনি ভারত তথা বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সফল অধিনায়ক। জিতেছেন আইসিসির সব ট্রফি। মাঠে তিনি তাঁর শান্ত স্বভাবের জন্য সবার কাছে পরিচিত ‘ক্যাপ্টেন কুল' হিসাবে। তবে রাগ যে তারও হয় তা কয়েকবার দেখেছে বিশ্ব। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন পেসার মিচেল জনসনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে কঠিন শীতল দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকানো হোক বা মনোযোগ না দেওয়ার জন্য নন-স্ট্রাইকে থাকা মনীশ পান্ডেকে ধমক। একবার আইপিএলের ম্যাচে আম্পায়ারদের দেওয়া নো বলের বিরুদ্ধে মাঠে চলে যান তিনি। তবে এই ধরনের ঘটনা হাতেগোনা। এমনই অজানা এক ঘটনা উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রাক্তন ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধর।
ধোনির মেজাজ হারানোর একটি উদাহরণ আর শ্রীধরের আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে। যেখানে প্রাক্তন ফিল্ডিং কোচ উল্লেখ করেছেন, যে কীভাবে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক তাঁর ক্রিকেটারদের প্রতি বিরক্ত হন। শ্রীধর তাঁর ‘কোচিং বিয়ন্ড’ বইতে লিখেছেন, ‘আমরা ২০১৪ সালের অক্টোবরে ফিরোজ শাহ কোটলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলছি। ম্যাচটি আমরা সহজেই জয়লাভ করি। কিন্তু মাঠে ফিল্ডিং একেবারেই নগণ্য ছিল। ফিল্ডিংয়ের মান দেখে ক্রিকেটারদের উপর রেগে যায় অধিনায়ক। ধোনি সবাইকে ডেকে বলে, আমি মনে করি বেশ কয়েকটা জিনিস এই ম্যাচে আমরা করতে পারিনি। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলিনি। এই ম্যাচটি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমরা জয়ী দল। তবে ম্যাচটি হারতেও পারতাম।’
শ্রীধর তাঁর বইতে আরও লেখেন, ‘মাহি ড্রেসিংরুমে দলকে যথেষ্ট বকাঝকা করে। ক্রিকেটারদের স্পষ্ট বার্তা দেয়, তারা যদি ফিল্ডিং এবং ফিটনেসের উপর নজর না দেয় তাহলে যত বড়ই নাম হোক না কেন বিশ্বকাপ থেকে তারা বাদ পড়বে। এই ঘটনা আমার চোখের সামনে ঘটেছে। শুধু তাই নয়, তখন আমি বুঝেছি, মাহি সাদা বলের ক্রিকেটে কী ধরনের ফিল্ডিং সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ০-১ পিছিয়ে ছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচটি ভারত ৪৮ রানে জিতলেও অনেক দুর্বলতা সবার সামনে আসে। ৪০ বলে অধিনায়কের অপরাজিত ৫১ রান না হলে ভারত সেই ম্যাচ জিততে পারত না। একসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করে দেয়। তবে পরবর্তী ৪৫ রানের মধ্যে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
প্রসঙ্গত, সেই সফরে প্রাথমিকভাবে পাঁচটি ওয়ানডে, তিনটি টেস্ট এবং একটি টি-টোয়েন্টি নির্ধারিত ছিল। হুদহুদ ঝড়ের জন্য তৃতীয় ওয়ানডে বাতিল হয়। সিরিজটি চারটি ওয়ানডেতে নামিয়ে আনা হয়। ধর্মশালায় চতুর্থ ওডিআইয়ের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৎকালীন অধিনায়ক ব্রাভো টসের সময় প্রকাশ করেন ক্রিকেটার এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে বেতন সংক্রান্ত বিরোধের জন্য দলটি বাকি সফর শেষ না করেই ফিরে যাবে। শেষ ম্যাচ না খেলেই ফিরে যায় ক্যারিবিয়ান দল। সিরিজ জিতে নেয় ভারত।