ভাই-বোনের ভালোবাসা ও অটুট সম্পর্কের উৎসব রাখী বন্ধন। কিন্তু জানেন কী, শিব-সহ অন্যান্য দেবতাদেরও বোন আছেন? রাখীবন্ধন উপলক্ষে জানুন, জানুন তাঁদের অজানা তথ্য।
১) শিব-পরিবার সম্পর্কে সকলেই জানেন, কিন্তু খুব কম লোকই জানেন যে শিবের একটি বোনও ছিলেন। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, কৈলাস পর্বতে পার্বতী একাকীত্ব অনুভব করায় তাঁর মনে হয়, ননদ থাকলে খুব ভালো হত। পার্বতীর মনের কথা বুঝে মহাদেব আপন মায়ায় সৃষ্টি করলেন তাঁর বোন আশাবরীকে।
২) মহাভারতে কৌরবদের এক বোন ছিলেন। তাঁর নাম ছিল দুঃশলা।
৩) রাজা বলির এক ধর্ম বোন ছিলেন। একদা রাজা বলির যজ্ঞে বিষ্ণু বামন অবতার ধারণ করে উপস্থিত হন। সেখানে নিজের পায়ের তিন ধাপের সমান মাপের জমি রাজার কাছ থেকে চান। বামনের পায়ের ধাপে কতটুকুই জমি ধরবে, এই ভেবে বিষ্ণুকে জমি দিতে রাজি হন রাজা। নিমেষের মধ্যে বিষ্ণু সমস্ত ভূমি নিয়ে নেন ও রাজা বলিকে পাতাল লোকে পাঠিয়ে দেন। তখন বলি বিষ্ণুর কাছে বর চান। বিষ্ণুকে সব সময় নিজের সামনে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন রাজা বলি। এই বরের কারণে বিষ্ণু পাতাললোকে রাজা বলির দ্বাররক্ষী হন। সে সময় স্বামীকে ফিরিয়ে আনার জন্য লক্ষ্মী এক সাধারণ মহিলার রূপ ধারণ করে কাঁদতে কাঁদতে পাতালে পৌঁছন। সেখানে রাজা বলি লক্ষ্মীকে তাঁর দুঃখের কারণ জিগ্যেস করায়, তিনি বলেন, তাঁর কোনও ভাই নেই। এর পর রাজা বলি লক্ষ্মীকে নিজের বোন পাতান। মনে করা হয়, তখন থেকেই রাখীবন্ধন উৎসব পালিত হয়।
৪) যমরাজের বোন যমুনার কথা অনেকেই জানেন। একবার যমুনা নিজের ভাই যমকে আমন্ত্রণ জানান। যম নিজের বোনের বাড়ি গেলে, যমুনা সেখানে তাঁকে ভোজন করান। প্রসন্ন হয়ে যম বর দিতে চান। যারা তাঁর জলে স্নান করবে, তারা কখনও যমলোকে যাবে না, এমন বর চান যমুনা। বর শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েন যম। ভাবেন, এভাবে যমলোকের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হবে। ভাইকে চিন্তিত দেখে যমুনা ফের বর চান যে, এদিন যে ভাই নিজের বোনের বাড়িতে আহার করবে ও যমুনার জলে স্নান করবে, তাঁকে যমলোকে প্রস্থান করতে হবে না। তখন থেকে যমদ্বিতীয়া পালিত হচ্ছে।
৫) রোহিণী-কন্যা সুভদ্রা কৃষ্ণের বোন ছিলেন। আবার যশোদার গর্ভ থেকে যোগমায়া হিসেবে জন্ম নেন দেবী সতী। কৃষ্ণের সঙ্গে পাল্টে বাসুদেব যোগমায়াকেই মথুরা নিয়ে যান। এ ভাবে যোগমায়া কৃষ্ণের বোন। পাশাপাশি দ্রৌপদীকে কৃষ্ণ নিজের বোনের সম্মান দিতেন।
৬) রামের ভাই সম্পর্কে সকলেই জানেন। কিন্তু রামের এক বোনও ছিলেন। তাঁর নাম ছিল শান্তা। রাজা দশরথ ও কৌশল্যার বড় মেয়ে ছিলেন শান্তা। জন্মের কয়েক বছর পর রাজা দশরথ কিছু কারণবশত অঙ্গদেশের রাজা রোমপদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন নিজের কন্যাকে। এর পর রাজা রোমপদ ও তাঁর স্ত্রী শান্তার লালন-পালন করেন।
৭) রাবণের বোন শুর্পনখার নাম সকলেরই জানা। তবে জানেন কী, রাবণের আর এক বোনও ছিলেন। তাঁর নাম ছিল কুম্ভিনী। মধু নামক এক রাক্ষস কুম্ভিনীর অপহরণ করে। ক্রোধবশত মধুকে বধ করতে পৌঁছলে বোনের কাছ থেকে রাবণ জানতে পারেন যে, মধু রাক্ষস কুম্ভিনীর সঙ্গে বিবাহ করেছে।