উপার্জনের তাগিদে থাকতেন মালয়েশিয়াতে। তবে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন কয়েকদিন আগেই। এই আবহে ২১ জুলাইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সমাবেশে যোগ দিতে গিয়েছিলেন কুতুবউদ্দিন মণ্ডল। লাখ লাখ মানুষের মতো তিনিও ধর্মতলায় বৃষ্টিতে ভিজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনেন গতকাল দুপুরে। এরপর বাড়ি ফেরার পালা। তবে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিল তাঁর। ধর্মতলা থেকে বাড়ি ফেরার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল কুতুবউদ্দিনের। মৃত যুবকের বয়স ৩২ বছর। জানা গিয়েছে, দীর্ঘকাল ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক কুতুবউদ্দিন। তাই মালয়েশিয়া থেকে ছুটিতে বাড়ি ফিরে একুশের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল ধর্মতলা থেকে বাড়ি ফেরার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় কুতুবউদ্দিনের। জানা যায়, বাড়ি ফেরার পথে বারাসত ১১ নম্বর রেলগেটের কাছে তিনি প্রস্রাব করছিলেন। সেই সময় আপ বনগাঁ লোকাল আসছিল। তবে ট্রেনের আগমনের বিষয়ে অবগত ছিলেন না কুতুবউদ্দিন। ট্রেনটি কাছে চলে এলেও তিনি টের পাননি। এই আবহে ট্রেনের ধাক্কা খান কুতুবউদ্দিন। এরপর তাঁকে তাঁকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা গিয়েছে, মৃত কুতুবউদ্দিনের বাড়ি হরিণঘাটার ফতেপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনপাড়ায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরপর মালয়েশিয়া থেকে হরিণঘাটার বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা দাবি করেছেন, ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্যই ছুটি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন কুতুবউদ্দিন। জানা গিয়েছে, এলাকার অনেকের সঙ্গে গাড়িতে করে ধর্মতলা গিয়েছিলেন কুতুবউদ্দিন। ফিরছিলেনও সেই গাড়ি করেই। ফেরার পথে কুতুবউদ্দিনের প্রস্রাব পায়। সেই সময় গাড়ির চালক রেলগেটের সামনে গাড়ি দাঁড় করায়। সেখানেই প্রস্রাব করতে নামেন কুতুবউদ্দিন। কিন্তু ট্রেন আসার বিষয়টি খেয়াল করেননি কুতুবউদ্দিন। গাড়িতে থাকা বাকি তৃণমূল সমর্থক এবং চালত জানান, তাঁরাও দেখেননি ট্রেনটিকে আসতে।
এদিকে খড়গপুরে অপর এক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আরও এক তৃণমূল কর্মীর। ধর্মতলার সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পরে তৃণমূল কর্মী বোঝাই বাস। রূপনারায়নপুরের কাছে সেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়নজুলিতে পড়ে যায়। এতে মৃত্যু হয় বিকাশ টুডু নামক এক যুবকের। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০ জন। জানা গিয়েছে, বাসটিতে ছিলেন প্রায় ৬০ জন। আহতদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অনেককেই ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৯ জন। এদিকে দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে যান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।