দ্রুতগতিতে টোটো চালানো নিয়ে চালক বনাম স্থানীয় চা দোকানের মালিকের বচসা গড়িয়েছিল হাতাহাতিতে। প্রকাশ্য রাস্তায় একে অপরকে আক্রমণ করে বসে। তারপর টোটোচালক তার দলবল নিয়ে হাজির হয় এবং মারধর শুরু করে। তখন চায়ের দোকান মালিককে বাঁচাতে গিয়ে মারাত্মক আঘাত পান এক পুরোহিত। তার জেরে মাটিতে পড়ে গেলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আজ, শনিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে হাওড়ার বি–গার্ডেন থানার ভাড়পাড়া এলাকায়।
ঠিক কী ঘটেছে হাওড়ার বি–গার্ডেনে? স্থানীয় সূত্রে খবর, এই পুরোহিত দু’পক্ষকেই মারামারি থেকে সরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এখানে দ্রুতগতিতে টোটো চলে। তাই জনবহুল এলাকায় যাতে বেশি জোরে টোটো চলাচল করতে না পারে তার জন্য রাস্তায় পাথর ফেলেছিল চা দোকানের মালিক। আর সেই পাথর সরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই টোটোচালক। তখনই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। সেটা হাতাহাতিতে গড়ায়। সেটাই থামাতে গিয়ে প্রচণ্ড আঘাত পান পুরোহিত। যার জেরে মৃত্যু হয়।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, চায়ের দোকানের মালিক সানি যাদব। আর টোটোচালক মিলন থাপা। সে রোজ এই চায়ের দোকানের সামনে দিয়ে জোরে টোটো চালিয়ে যায়। নিষেধ করলেও শোনেনি মিলন থাপা। এদিনও দোকানের সামনে দিয়ে জোরে টোটো চালিয়ে গেলে দু’জনের বচসা বাঁধে। তখন সানিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় মিলন। আজ, শনিবার সকালে সানি মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিল। তখন তাকে একা পেয়ে মিলন থাপা ও তার দলবল হামলা করে। এটা দেখে এলাকার বাসিন্দা পেশায় পুরোহিত অবোধ কিশোর ওঝা (৬০) দু’পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তখন তাঁকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পুরোহিত অবোধ কিশোরের। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ আলতাব এবং পারভেদ মুশারফ। এরা দুষ্কৃতী।
আর কী জানা যাচ্ছে? ওই পুরোহিতের মাথায় মারাত্মক চোট লেগেছিল। প্রথমে দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পুরোহিকে। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাওড়ার আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যদিও বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে চম্পট দিয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তবে ধৃত দু’জনকে এদিন আদালতে পেশ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।