ইসলামপুরের পর ইটাহারেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ এড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী। আমন্ত্রণ পেলেও অভিষেকের ডাকা সাংগঠনিক বৈঠকে মঙ্গলবার গরহাজির রইলেন তিনি। বারবার দলীয় কর্মসূচি এড়ানোয় তৃণমূল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে কি না তা নিয়ে দলের মধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
‘নব জোয়ার’ যাত্রায় বেরিয়ে মঙ্গলবার ইটাহারে সাংগঠনিক বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয় সমস্ত বিধায়ক, ব্লক সভাপতি ও জেলা কমিটির পদাধিকারীদের। সেই তালিকায় নাম ছিল ইসলামপুরের ১১ বারের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরীরও। কিন্তু ইসলামপুরে অভিষেকের সভার মতো সেখানেও হাজির ছিলেন না তিনি।
ইসলামপুরে অভিষেকের সভার দিন সভাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতে বসে ছিলেন করিম চৌধুরী। তাঁকে ঘিরে রেখেছিলেন সমর্থকরা। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি স্পষ্ট বলেন, পঞ্চায়েতের প্রার্থী নির্বাচনের এই পদ্ধতি তিনি মানেন না। কে ভোট দিচ্ছে, কেন ভোট দিচ্ছে কিছুই জানেন না তিনি। এমনকী তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেনেন না বলেও মন্তব্য করেন। বলেন, অভিষেকের সঙ্গে কোনও দিন দেখা হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী। জানান, অভিষেক তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেলে তবে সভায় যাবেন তিনি। সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, তাঁর তৈরি করা প্রার্থীতালিকায় দল সম্মতি না জানালে নির্দল হয়ে লড়বেন তাঁরা।
বারবার দলের বিরুদ্ধে সরব হলেও করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবে করিম চৌধুরীর গায়ে হাত দিতে ভয় পাচ্ছে শাসকদল। একেই সাগরদিঘি উপনির্বাচনে মুসলিম ভোট তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। তার পর করিম চৌধুরীর মতো বর্ষীয়ান নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে মুসলিমরা তৃণমূলের ওপর আরও চটে যেতে পারে বলে মনে করছে শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের সংগঠনের হাল যে খারাপ তা বুঝেই সাংগঠনিক সভা ডেকেছেন অভিষেক। এই জেলায় একের পর এক ঘটনায় মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের। তার ওপর করিম চৌধুরী ও জেলা সভাপতি কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের দ্বন্দে বেহাল সংগঠন। তাই সভা থেকে একজোট হয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।