বিজেপি–তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সভায় জনগণের কাছে একটাই আবেদন রেখে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘বাংলাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিতে হবে। না হলে বাংলা শেষ হয়ে যাবে।’ রবিবার ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে এই কথার জবাব দিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানালেন শুভেন্দুকে। তুই–তুকারি করেই বললেন, ‘এক বাপের ব্যাটা হলে আগে ডায়মন্ড হারবারটা তুলে দেখা না। কত ধানে কত চাল বোঝা যাবে।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘নিজের মেরুদণ্ড, বাংলার মান–সম্মান, কৃষ্টি, ঐতিহ্যকে বিক্রি করে দিয়ে লজ্জার মতো বলছে, বাংলাকে নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিতে হবে।’ কটাক্ষের সুরে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘বাংলা কি আলু, পেঁয়াজ, টমেটো না জয়নগরের মোয়া যে নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিতে হবে? বাংলা কি কোনও বস্তু?’ এর পরই শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক বলেন, ‘এক বাপের ব্যাটা হলে আগে ডায়মন্ড হারবারটা তুলে দেখা না। কত ধানে কত চাল বোঝা যাবে। এখানে সাতটা বিধানসভা আছে, এই সাতটা বিধানসভার মধ্যে একটাও নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিয়ে দেখাক না।’
এদিকে, দাঁতনের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী অভিষেককে কটাক্ষ করে বলেন, ‘১৬০০ বুথের মধ্যে ৩০০ বুথে জিতে বলছে ৩ লাখ ভোটে জিতেছে। কী করে লোকসভা ভোট হয়েছিল লোক জানে না? আর ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় এমন কী ঘটে গেল যে পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা একটা প্রার্থীও দিতে পারেনি। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, এসইউসি, এমনকী নির্দলরাও প্রার্থী দিতে পারেনি। সব বিডিও অফিসের সামনে জিহাদিদের বসিয়ে রেখেছিল।’
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আক্রমণ করেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি। অভিষেকের কথায়, ‘তিনি তো নিজে মিটিং করতে এসেছিল। সন্ধে ৫টায় এসেছিল। দু’ঘণ্টা গ্রিনরুমে বসেছিল। লোক হয়নি। তার পর ২ ঘণ্টা পরে স্টেজে উঠেছে। আধ ঘণ্টা ভাষণ দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। আর এই এলাকার মানুষ আমাকে সাড়ে ৩ লক্ষ ভোট দিয়ে জিতিয়েছে।’ বিজেপি–র বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, ‘পৃথিবীর সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আর তার অবস্থা ল্যাজেগোবরে করে দিয়েছে এই ডায়মন্ড হারবার আর ভাইপো নিজে।’
শনিবার হেস্টিংসে সাংসদ সুনীল মণ্ডলের গাড়িতে হামলার ঘটনার নিন্দা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘আমার লজ্জা হচ্ছে আমি ২১ বছর ধরে তৃণমূল দলটা করেছি। সত্যি লজ্জা লাগছে। এই কালচার থেকে বাংলাকে বের করে আনতে হবে।’ এর জবাবে এদিন শুভেন্দুর নাম না করে অভিষেক বলেন, ‘তোমার বাবা আর ভাইটা তো তৃণমূল করে। একই বাড়িতে থাকতে লজ্জা লাগে না? নিজের বাড়ির লোককেই তো ভাঙিয়ে আনতে পারো না। তুমি বাংলায় পদ্ম ফোটাবে? নিজের বাড়িতে পদ্ম ফোটাতে পারছে না তিনি নাকি বাংলায় পদ্ম ফোটাবে!’
এদিকে, এদিনই দাঁতনের জনসভায় সাধারণ মানুষের কাছে শুভেন্দু আবেদন জানিয়েছেন, ‘মোদীজিকে রাজ্যটা না দিতে পারলে রাজ্যটা বাঁচবে না। কলকাতা আর দিল্লিতে একই দলের সরকার চাই। তা হলেই বেকার যুবকদের চাকরি হবে। শিল্প আসবে, কৃষি বাঁচবে।’