গ্রামবাসীদের বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সকাল থেকেই তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, শনিবার ময়নাগুড়ি থেকে তাঁর ব্যস্ততা শুরু হয়। কিন্তু দুপুরে খাবেন কোথায়? এই প্রশ্ন উঠতেই দেখা গেল, গ্রামবাসীদের বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সারেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ব্যস্ততা চরমে উঠেছিল ময়নাগুড়ির দোমোহনির রাউত বাড়িতে। ময়নাগুড়ির ভোটপট্টি হাসপাতাল মাঠের জনসভা সেরে দুপুরে দোমোহনি চলে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দোমোহনি হাটের পাশে পুরাতন বাজারের রাউত বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সারেন তিনি।
এখানে এসে বাড়ির অন্য়ান্য সদস্যদের সঙ্গে মাটিতে বসেই সারলেন দুপুরের খাওয়া। এখানের বাসিন্দা জীবন রাউতের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করতে দেখা যায় তাঁকে। তাও আবার মাটিতে বসে। যা অনেকেই কল্পনা করতে পারেননি। একবছর আগে ১২ জুলাই সাংগঠনিক সভা করতে এখানে এসেছিলেন তিনি। এই বাজার এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার কথা জেনেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে বাজার সংস্কারের কথা শুনেছিলেন। তারপর অভিষেকের উদ্যোগে জেলা পরিষদ এই বাজার সংস্কার করে দেয়। তখনই জীবনবাবু অভিষেককে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ করেছিলেন। অভিষেকও কথা দিয়েছিলেন আসবেন। এবার এলেন।
এদিকে অভিষেকের মতো একজন জননেতা তাঁদের বাড়িতে এসে দুপুরে খাবেন, এটা ভেবে আনন্দিত রাউত বাড়ির গৃহকর্ত্রী রুমা রাউত। তাই দুপুরে হালকা মেনু সাজান তিনি। ঠিক কী ছিল অভিষেকের মেনুতে? মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, বেগুন ভাজা, আলু ভাজা, আলু দিয়ে পাতলা করে আড় মাছের ঝোল,কালোজিরে–কাঁচা লঙ্কা দিয়ে বোরলি মাছের পাতলা ঝোল। শেষ পাতে ছিল চাটনি, দই, মিষ্টি। এখানে চমক বলতে বোরলি মাছের ঝোল। যা কলকাতার বহু মানুষই খাননি অথবা জানেন না।
বোরলি মাছটি চমক কেন? এই মাছের সঙ্গে রাজ্য–রাজনীতির একটা সম্পর্ক আছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু জলপাইগুড়িতে এসে খোঁজ করতেন তিস্তার এই বোরলি মাছের। আজ অভিষেকের মেনুতে ছিল তিস্তার সেই বোরলি মাছ। কলা পাতায় অন্যান্য পদের সঙ্গে বোরলি মাছের ঝোল দিয়ে ভাত মেখে খান অভিষেক। রুমা দেবীর বাড়ির পাশ থেকে বয়ে গিয়েছে তিস্তা নদী। আর সেই নদী থেকে আনা হয়েছিল তাজা বোরলি মাছ। রাজবংশীদের বিশেষ পদ সজনে পাতার বাটাও দেওয়া হয়েছিল অভিষেককে। জীবন রাউতের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তিনি টিউশনি করেন। আর রুমা রাউত বলেন, ‘এখন গরম পড়েছে বলে হালকা রান্নাই করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। ওনাকে মাটির থালা, বাটি, গ্লাসে খেতে দেওয়া হয়।’