কিছুদিন আগেই একের পর এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এবার অগ্নিদ্বগ্ধ রোগিণীর মৃত্যুকে ঘিরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। তাদের বক্তব্য, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকলেও কোনও রকমের চিকিৎসা করা হয়নি। রোগিণী যন্ত্রণায় ছটফট করত করতে হাসপাতালের মধ্যেই মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য নিয়ম মেনে চিকিৎসা করা হয়েছে রোগিণীর।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে শিশু মৃত্যু বেড়ে ১৪, খতিয়ে দেখল প্রতিনিধি দল
হাসপাতাল এবং পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগিণী মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মির্জাপুরের বাসিন্দা। তার নাম কজুলি বিবি (২৬)। তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। দিন চারেক আগে আগুনে পুড়ে গুরুতর জখম হয়েছিলেন কাজুলি বিবি। সেই ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা ৪০ শতাংশ বার্ন ইঞ্জুরি নিয়ে তাকে ভর্তি করেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সাধারণত রোগীরা যাতে যন্ত্রণায় ছটফট না করে হাত পা যাতে নাড়াচাড়া করতে না পারেন তার ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু, কাজুলির ক্ষেত্রে সেই ব্যবস্থা ছিল না। একসময় যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে শয্যা থেকে উঠেই দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করে কাজুলি বিবি। তার হাতের স্যালাইন খুলে যায়। সেই অবস্থায় ছোটাছুটি করতে গিয়ে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের আরও অভিযোগ, সেই সময় হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডে কোনও নার্স বা চিকিৎসক আসেননি। ফলে শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ হাঁসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য বিছানা ছেড়ে ওঠেননি রোগিণী। এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ জানান, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চিকিৎসা হয়েছে। রোগিণীর শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, মৃতার এক আত্মীয় জানান, চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক আসেননি। শনিবার রাতে অসম্ভব যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে একসময় শয্যা ছেড়ে দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করেছিলেন কাজুলি। সেই সময় সামলাতে না পেরে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়।