আসানসোলের মুখ্য প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির চিঠি নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিলেন আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার ফোনে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, কার সঙ্গে কথা বলবেন জিতেনবাবু? তৃণমূলে তো একটাই পোস্ট, বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘আমি যে এতদিন মিথ্যে বলিনি তা আজ উপলব্ধি করছেন আসানসোলের মানুষ।’
এদিন বাবুল বলেন, ‘জিতেনবাবুকে ধন্যবাদ জানাই যে উনি এতদিন পর সাহস করে কথাগুলো বলেছেন। আমরা রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা এনে দিতে চাইলেও রাজ্য সরকারের বাধায় তা হচ্ছে না। আসানসোলকে স্মার্ট সিটি করার পরিকল্পনা খরিজ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিউ টাউনকে স্মার্ট সিটি বানিয়েছেন। ওখানে আর নতুন করে স্মার্ট সিটি করার কী আছে?’
বাবুলের দাবি, ছবছরের মন্ত্রিত্বে একাধিকবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বিভিন্ন কারণে চিঠি দিয়েছেন তিনি। আজ পর্যন্ত একটি চিঠিরও জবাব মেলেনি। জবাব দিয়ে থাকলে তা প্রকাশ্যে আনুন ফিরহাদ হাকিম। এমনকী কঠিন বর্জ প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্প আসানসোলে শুরু করার জন্য দিল্লি থেকে আধিকারিকদের কলকাতায় এনেছিলাম। তাজ বেঙ্গলে লাঞ্চ হওয়ার পরেও ওই প্রকল্পের নামকরণ নিয়ে বেঁকে বসে রাজ্য। জানায় প্রকল্পের নাম করতে হবে নির্মল বাংলা। যার জেরে হোর্ডিং ছাপানোর পরও বাতিল হয়ে যায় প্রকল্প।
বাবুলের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর সঙ্গে চরম অসহযোগিতা করেছেন। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন আমি আসানসোলকে স্মার্ট সিটি প্রকল্প গ্রহণ করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২টো চিঠি দিয়েছিলাম। ফোনেও কথা হয়েছিল। তাঁকে বলেছিলাম, আসানসোলের সাংসদ কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী। ফলে শহরের মানুষ তাঁর কাছ থেকে এই প্রকল্প প্রত্যাশা করেন। সেই চিঠির জবাব আজও পাইনি।
বাবুলের প্রশ্ন, কেন্দ্রের টাকা আবার কী? কেন্দ্রের টাকা, মানুষের টাকা। সেই টাকা মানুষকে পাঠানো হয় বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে। মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই রাজ্যগুলির বরাদ্দ ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪২ শতাংশ করে। সেই টাকার আজও কোনও হিসাব দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দেশের সমস্ত রাজ্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কীভাবে খরচ হয়েছে তার হিসাব দেয়। পশ্চিমবঙ্গ তার কোনও হিসাব দেয় না। এমনকী ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোকেও তথ্য পাঠায় না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে।
জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে বাবুল বলেন, ‘উনি আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হতে পারেন কিন্তু সাহস করে কথাগুলো বলেছেন এজন্য ওনাকে ধন্যবাদ জানাবো। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, কথা বলতে পারতো। কার সঙ্গে কথা বলবে? ফিরহাদ হাকিম তো নিজেই বলে রেখেছেন, তৃণমূলে একটা পোস্ট, বাকি সব ল্যাম্প পোস্ট।’