সিবিআই গ্রেফতার করেছে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। তারপরই শাসক– বিরোধী শিবিরে দু’রকম ছবি ধরা পড়েছে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। আবার অনেক নেতাদের মোবাইল বন্ধ। এমনকী আজ যে রাখিবন্ধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর বিরোধীরা অক্সিজেন পেয়ে নানা টিপ্পনি–সহ কাজকর্ম করতে শুরু করেছেন।
ঠিক কী পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে? অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পর বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বিজেপির দিকে আঙুল তোলেন। বিজেপির চক্রান্তের জেরেই দলের জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সরব হলেন অনেকে। এটা ছিল বৃহস্পতিবারের ছবি। শুক্রবার থেকে আরও কারও কোনও পাত্তা নেই। সিউড়ি পুরসভার সামনে উৎসব থমকে যায়। জেলা তৃণমূল ভবনে ফিরে যান বিধায়ক তথা জেলা পরিষদেক সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। শহর সভাপতি মহম্মদ সফি, জেলা নেতা রাধাবল্লভ চট্টোপাধ্যায় পার্টি অফিসে চলে আসেন। পরে বিকাশবাবু সিউড়ি থেকে বোলপুর বাড়িতে ফিরে যান। রামপুরহাটে উৎসব চলছিল। সেখানে হাজির ছিলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পুরপ্রধান সৌমেন ভকত। এই অনুষ্ঠান সেরে রামপুরহাট পাঁচমাথার মোড়ে তাঁদের আসার কথা ছিল। কিন্তু দু’জনেই ব্লক অফিস থেকে ফিরে যান। ফোনেও পাওয়া যায়নি আর।
তারপর সেখানে কী ঘটল? এই গ্রেফতারের ঘটনার পর জেলার শীর্ষ নেতারা বৈঠকে করেছেন। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে চর্চা, আপাতত সংগঠন দেখার দায়িত্ব মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংয়ের হাতে দেওয়া হবে। জেলা পার্টি অফিসে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন জেলার কয়েকজন নেতা। তাঁরা আগামী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন। যা পালন করা হবে বীরভূমের মাটিতে। বীরভূমের আম জনতার চোখও আজ সকাল থেকে ছিল টিভির পর্দায়। অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্টের বন্যা বয়ে যায়।
কে, কী বলছেন বিষয়টি নিয়ে? এই ঘটনার পর মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিং সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এই চরম সময়ে আমি জেলার বাইরে সরকারি কর্মসূচিতে মেদিনীপুরে। আমি জেলায় ফিরে ওদের সঙ্গ দেব।’ লাভপুরের বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিং বলেন, ‘দলের এখন সংকট মূহূর্ত চলছে। লাভপুরে কর্মীদের নিয়ে বসেছি। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছে।’ জেলা সহ–সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আইনের লড়াই আইন দিয়ে হবে।’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন যা কিছু, সবই পুলিশ নির্ভর। তাসের ঘরের মতো তা ভাঙতে বাধ্য।’