নন্দীগ্রামে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির লড়াইয়ে অন্যতম সৈনিক ছিলেন বটকৃষ্ণ দাস এবং নন্দীগ্রাম দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতির জয়দেব দাস। তারা দুজনেই দল ছেড়ে দেওয়ার পরেই সেখানে বিজেপিতে ভাঙ্গনের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই আশঙ্কায় সত্যি হল। সেখানে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ৩২ জন নেতা। সেইসঙ্গে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন ৫০০ বিজেপি কর্মী। শুধু তাই নয়, রাতারাতি বিজেপির পার্টি অফিস বদলে গেল তৃণমূলের পার্টি অফিসে।
বিজেপির নন্দীগ্রাম -১ দক্ষিণ মণ্ডল কার্যালয় রাতারাতি তৃণমূলের গোকুলনগর অঞ্চল কার্যালয়ে পরিণত হল। এ বিষয়ে সদ্য বিজেপিত্যাগী জয়দেব দাস বলছেন, ‘নন্দীগ্রাম ধান্দাবাজদের যোগ্য জবাব দিয়েছে।’ শুক্রবার রাতেই তৃণমূলে যোগ দিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারের কাজে নেমে পড়েছেন বিজেপি থেকে ঘাসফুলে আসা নেতা কর্মীরা। তারা চাইছেন আরও উন্নয়নমূলক কাজ হোক এলাকায়।
নন্দীগ্রামে বিজেপির একাংশের মধ্যে দীর্ঘদিন এই ধরেই ক্ষোভ ছিল। একসময় শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে থাকার সময় তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতৃত্ব। এখন সেই শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে আসায় অনেকেই তা মেনে নিতে পারছে না। বটকৃষ্ণ জানিয়েছিলেন, ‘এক সময় শুভেন্দু অধিকারীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। এখন এরাই বিজেপিতে জাঁকিয়ে বসেছে। পুরনো দল ছাড়তে কষ্ট হয়েছে। তবে ভালো লাগছে যে অত্যাচারীদের সঙ্গ ছাড়তে পেরেছি।’
বিজেপিত্যাগীরা এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপির ওই দলীয় কার্যালয় থেকে সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বের ছবি সরিয়ে ফেলেন। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারদের ছবি ছিল সেখানে। এছাড়াও ছিল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিশাল কাটআউট। তাদের জায়গায় বসানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রভৃতি নেতৃত্বের ছবি। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে বিজেপি। জয়দেব দাস বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর মতো স্বৈরাচারী লোকদের মেনে নিয়ে না পেরে মানুষ স্বেচ্ছায় ঘাসফুলে যোগ দিয়েছে।’