নবান্ন অভিযানের মতোই বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধল শিলিগুড়িতে। সোমবার বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শিলিগুড়ির তিনবাত্তি মোড়সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। অভিযানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন বিজেপি কর্মীরা। পালটা টিয়ার গ্যাসের সেল ছোড়েন পুলিশকর্মীরা। চালান লাঠি।
এদিন দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে তরাই ও ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে এসে পৌঁছন বিজেপি কর্মীরা। পালটা প্রস্তুত ছিল পুলিশও। বর্ধমান রোডে একাধিক জায়গায় করা হয় ব্যারিকে়ড। দলীয় নেতৃত্ব পৌঁছনোর আগেই মিছিল করে পুলিশের ২টি ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বিজেপিকর্মীরা। বেলা ২টো নাগাদ দলীয় নেতৃত্ব পৌঁছলে শেষ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন তাঁরা। পুলিশের তরফে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বলে জানানো হলেও বিরত হননি তাঁরা। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে শীতের বিকেলে বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে জলকামান থেকে জল ছোড়ে পুলিশ। পালটা ইট ছোড়েন বিজেপিকর্মীরা। এমনকী বোতল ছোড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
ওদিকে ভেঙে ফেলা ব্যারিকেডে আগুন ধরিয়ে দেন কিছু বিজেপি কর্মী। পুলিশকে উদ্দেশ করে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক এই পরিস্থিতি চলার পর লাঠি নিয়ে ময়দানে নামে পুলিশ ও রোবোকপ। বিজেপি কর্মীদের বেধড়ক পেটান তাঁরা। তিনবাত্তি মোড় ও নৌকাঘাট এলাকায় জমায়েত হওয়া বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
এদিনের কর্মসূচি শুরুর আগে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এক সভায় বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি ও হিন্দিভাষীদের মধ্যে বিভাজন করে তোষণের রাজনীতি জারি রাখার চেষ্টা চলছে। বাংলার যে দুর্গাপূজার খ্যাতি জগৎজোড়া আপনিই তার বিসর্জন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে মহরমের শোভাযাত্রা বার করার অনুমতি দিয়েছিলেন।’
আমফানের ত্রাণ দুর্নীতি নিয়েও মুখ খোলেন কৈলাস। বলেন, ‘আমফানের ত্রাণ দুর্নীতিতে CAG তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গরিবের বাড়ি বানানোর টাকা আত্মসাৎ করে এমন মুখ্যমন্ত্রীর দরকার আছে কি?’
অভিযান শেষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘কলকাতার মতো এখানেও দুষ্কৃতীরা ছাদের ওপর থেকে বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ফেলছে। গজলডোবার এক বিজেপি কর্মীর পুলিশের লাঠিতে মাথা ফেটেছিল, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। শান্তিপ্রিয় আন্দোলনের ওপর পুলিশ যেভাবে হামলা করছে আমরা কল্পনা করতে পারি না। সরকারের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে, তাই পুলিশ দিয়ে সব ঠেকানোর চেষ্টা করছে।’