শনিবার রাতে বরাহনগরের ঘোষ পাড়ার কাছে ট্রাফিক সিগনালে পথদুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন অভিনেত্রী সুচন্দ্রা মল্লিক। রাতে শ্যুটিং সেরে অ্যাপ বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। বাইকে সামনে একটি সাইকেল এসে পড়ায় ব্রেক কষে বাইকটি। বাইকে পিছন থেকে ছিটকে যান সুচন্দ্রা। পিছন থেকে একটি লরি এসে তাঁকে চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান অভিনেত্রী। অনন্যা থেকে ডানলপ পর্যন্ত বিটি রোডের যা অবস্থা তাতে এই ধরনের পথদুর্ঘটনা যে কোনও দিন আবারও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিটি রোড রোড ও তার আশপাশে জল দাঁড়ানো বন্ধ করতে রাস্তা নীচ দিয়ে নিকাশির নালা তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজের জন্য রাস্তার এক দিকে ব্যাহত হচ্ছে যান চালচল। দিনের ব্যস্ত সময় তো বটেই, অন্য সময়েও যানজট লেগেই থাকছে। যানজট এড়াতে গাড়ি চালকরা বিটি রোডের লাগোয়া গোপাল লাল ঠাকুর রোড ব্যবহার করছেন। ফলে সেই রাস্তাতেই যানজট লেগে থাকছে।
শুধু যে যানজটেই থেমে আছে সমস্যা বিষয়টি তেমনটা নয়। নিকাশি নালার উপর ম্যানহোল তৈরি করা হয়েছে, তা রাস্তার চেয়ে কিছুটা উঁচু। কালভার্টের চারপাশ পিচ-পাথর দিয়ে ডেকে দেওয়ার চেষ্টা হলেও কোথায়ও কোথাও তা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন,'কদিন আগেই এক সাইকেল আরোহী আমার সামনে সাইকেল নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলেন। উঁচু ম্যানহোল আর রাস্তার মাঝখানে ওঁনার সাইকেলের চাকা পড়ে গিয়েছিল। তাতেই এই দুর্ঘটনা। ভাগ্যিস সেই সময় পিছন থেকে গাড়ি আসছিল না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।' ওই বাসিন্দার কথায় রাস্তা উঁচু না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। বাস, লরি ছাড়াও অটো টটো, সাইকেলের মতো ছোট চাকার গাড়িও চলে। ফলে যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটে পারে।
কিন্তু কবে উঁচু হবে রাস্তা তাও স্পষ্ট করে জানেন না কেউ। নিকাশি কাজের জন্য রাস্তার ক্ষত মেরামতে দায়িত্বে থাকা কন্ট্রাকটরও এই নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। রাস্তার কাজের জন্য পড়ে থাকা বালি, সিমেন্ট মাখা গুড়ো ছড়িয়ে পড়ে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়েছে। রাস্তার ধারে বালি ফেলে রেখেই কাজ চলছে।

রাস্তার ধারেই বালি ফেলে রেখে চলছে কাজ।
(নিজস্ব চিত্র)যান নিন্ত্রয়ণের জন্য বাড়তি ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের ব্যস্ততম সময়ে বাড়তি পুলিশ থাকলেও অন্য সময় সেখানে পুলিশের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে স্মৃতিতে চলে যাওয়া বিটি রোডের যানজট গত কয়েক মাস ধরে আবার ফিরে এসেছে। আর এই যানজটে হায়রানি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
বরানগর মিউনিসিপলিটির সিআইসি সদস্য রামকৃষ্ণ পাল বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা নিয়ে পিডব্লুডিকে জানিয়েছি। দ্রুত সম্ভব রাস্তা উঁচু করার কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।’
পথচারি এক বাসিন্দার কথায়, আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্সের যুগে ‘টু ডেজ পেন, টুমরোজ গেন’ কথাটা কি চলে?