শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির আত্মসমর্পণের আর্জি ফিরিয়ে দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত। নিয়মমতো তাঁকে বিধায়ক এবং সাংসদদের জন্য বিশেষ আদালতে বিজেপি বিধায়ককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সপ্তাহদুয়েক আগে গঙ্গাজলঘাটি থানায় চন্দনার গাড়িচালকের স্ত্রী যে অভিযোগ করেছিলেন, তার ভিত্তিতে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে আত্মসমর্পণের আবেদন জানান শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক। আদালতেও হাজির ছিলেন তিনি। যদিও বিধায়কের আত্মসমর্পণের আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী সজল বারিক। তিনি সওয়াল করেন, বিধায়ক এবং সাংসদদের জন্য উত্তর ২৪ পরগনায় বিশেষ আদালত আছে। তারপরই আত্মসমর্পণের আবেদন ফিরিয়ে নেন আইনজীবী লোকেশ মুখোপাধ্যায়।
পরে চন্দনার আইনজীবী জানান, বিধায়ক আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিলেন। যদিও সরকারি আইনজীবী দাবি করেন যে বারাসতে বিধায়ক এবং সাংসদদের জন্য নির্দিষ্ট আদালতে তাঁকে আবেদন করতে হবে। সেইমতো আবেদন ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বারাসতে চন্দনা কবে আত্মসমর্পণ করবেন, তা ঠিক করবে বিজেপির আইনজীবী সেল। অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী জানান, বারাসতে আত্মসমর্পণ না করলে চন্দনার বিচারবিভাগীর হেফাজতের সম্ভাবনাও আছে। তারপরই আবেদন তুলে নেওয়া হয়েছে।
গত মাসের মাঝামাঝি চন্দনার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার বিয়ে করার অভিযোগ তোলেন বিজেপি বিধায়কের গাড়িচালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর স্ত্রী রুম্পা। তিনি দাবি করেন, বিবাহিতা সত্ত্বেও বিয়ে করেছেন চন্দনা এবং কৃষ্ণ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চন্দনা এবং কৃষ্ণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ (বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক), ৪৯৮এ (বধূ নির্যাতন) মতো ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
যদিও বিয়ের দাবি উড়িয়ে দেন চন্দনা। পালটা দাবি করেন, মিথ্যা কথা রটানো হচ্ছে। স্বামী শ্রবণের সঙ্গে পারিবারিক অশান্তি হয়েছিল। যা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। কিন্তু তাঁর নামে ভুয়ো প্রচার করা হচ্ছে। স্বামীকে পাশে বসিয়ে ‘অপপ্রচারের’ জন্য বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। চন্দনার স্বামীও দাবি করেন, স্ত্রী কাউকে বিয়ে করেননি। মনসা পুজো থাকায় তিনি বেশি নেশা করে ফেলেছিলেন। তা নিয়ে স্ত্রী'র ঝামেলা হয়েছিল বলে জানান তিন সন্তানের বাবা শ্রবণ।
তাতে অবশ্য রাজনৈতিক মহলে চর্চা থামেনি। কৃষ্ণের মন্তব্যে আরও চর্চা বাড়তে থাকে। তাঁকে হাসপাতালেও ভরতি করা হয়। কৃষ্ণ হাসপাতালে ভরতি থাকার সময় রুম্পা বলেন, ‘আমি আর মানতে পারছি না। আমার মাথার ঠিক নেই। সারাদিন চন্দনা-চন্দনা করে চলেছে। এতই যদি ভালোবাসত, তাহলে তো একদিন ফোন করে খবর নিত।’ তারইমধ্যে বুধবার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, চন্দনার মতো একজন প্রান্তিক মহিলার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরপ করা হচ্ছে। চন্দনাকে তৃণমূলে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মাথা নত করেননি চন্দনা।