আজ, মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরে বুথভিত্তিক কর্মী সম্মেলন থেকে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব মেদিনীপুর সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। দিঘার জনসভা থেকে আজ আবার বিজেপি এবং সিপিএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন রাজ্য–রাজনীতিতে চিরকূটে চাকরি ইস্যু সরগরম হয়ে ওঠে। আর তা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ, মঙ্গলবার একদিকে এই চিরকূটে চাকরি অন্যদিকে রাজ্যে অশান্তি ছড়ানো নিয়েও তোপ দাগেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি। আর এই জেলাতেই কয়েকজন হার্মাদ চাকরি বিক্রি করেছে। পুরুলিয়ার চাকরিও এখানে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের অজান্তে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। দিদি ও দিদি বলে গেল। বলল আপকি বার ২০০ পার। যখন পেল না তখন কী করল? তখন নন্দীগ্রাম লুঠ করল। যে কটা সিট পেয়েছে তা লুঠ করে। আগামীতে বিচার হবে। আমি কোর্টে গেছি। আমি প্রমাণ করতে চাই তিন ঘণ্টা কেন লোডশেডিং হয়েছিল?’
হিংসা নিয়ে কী বলেছেন? রাজ্যের দুই প্রান্ত শিবপুর এবং রিষড়ায় রামনবমীর মিছিল থেকে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার এই বিষয়টি নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘অশান্তি বাংলার সংস্কৃতি নয়। বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে আসছে বিজেপি। বাংলার মানুষ শান্তি চায়। বিজেপি ভাড়া করে দুষ্কৃতী আনছে। মিছিলে বন্দুক নিয়ে নাচছে, এসব সিপিএমও করত। এরা বোঝে না, বাংলার মানুষ দাঙ্গা ভালবাসে না। মানুষ দাঙ্গা করে না। বিজেপি দাঙ্গা করার জন্য গুন্ডা ভাড়া করে। এটা ক্রিমিনালদের নিয়ে অশান্তি করা। বিজেপি সারাক্ষণ হিংসা ছড়ায়। সিপিএমের হার্মাদরা আজ বিজেপির ওস্তাদ। আমাকে নন্দীগ্রামে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। নন্দীগ্রামে হাসপাতালে গেলে গুলি চলল।’
নাম না করে শুভেন্দুকে কেমন আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর? আজ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রিষড়ায় গিয়েছিলেন। সেখানে পরিদর্শন করেন। পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে কথা বলেন। আর দিঘার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এরা ভাবছে মমতাকে তো হারানো যাচ্ছে না। তাই প্রথমে চরিত্রহনন করতে হবে। যেটা সিপিএম করেছিল। নন্দীগ্রামে নির্বাচনের সময় আমার পা ভেঙে গিয়েছিল। এখনও আমার বাঁ পা ফোলা। তখন আমার মাথা ব্যথা করছিল। যন্ত্রণা হচ্ছিল। কলকাতায় যেতে হত। নয়ত হার্ট অ্যাটাক হতে পারত। যাতে প্রচার করতে না পারি তাই এই সব করেছিল। কিন্তু ওরা আমায় চেনে না। ওনা বুনো ওল হলে আমিও বাঘা তেঁতুল। আমিও হিন্দু। স্বামী বিবেকানন্দ হিন্দু। আমি সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী। এই জেলা ক্ষুদিরামের জেলা। মাতঙ্গিনী হাজরার জেলা। আজকে লজ্জা লাগে এখানকার কিছু হার্মাদ আমাদের থেকে সব কিছু নিয়েছে। ওদের হাতে আমরা চাকরিগুলি দিয়েছিলাম। ওরা আমাদের হাত থেকে চাকরি নিয়ে বিক্রি করেছে। আমরা জানতাম না। পুরুলিয়ায় একটাও দেয়নি। ওখানকার চাকরি এখানে বেচে দিয়েছে। আজকে সিবিআই–ইডি নিয়ে বড় বড় কথা বিজেপি নেতাদের।’