বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হচ্ছে না। এটা একেবারে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আর তার পরই আরও আক্রমণ বাড়িয়ে তুলল কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে কেন সন্দেশখালি যাচ্ছেন না? মহিলা মুখ্যমন্ত্রী কেন অত্যাচারিত মহিলাদের কথা গিয়ে শুনছেন না? সন্দেশখালি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবেই আক্রমণ করেছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। যদিও একদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যারা অপরাধ করেছে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে। রাজ্য মহিলা কমিশনকে পাঠানো হয়েছে। তারপরও সন্দেশখালি নিয়ে এমন আক্রমণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি থেকে বিরোধী দলনেতা সন্দেশখালিকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে সরকার বিরোধী ধোঁয়া তুলতে চাইছেন। এমনই অভিযোগ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ কোনও আন্দোলন, বিক্ষোভ করেননি। দু’একজন মানুষ যারা অত্যাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে সন্দেশখালির বাসিন্দারা আওয়াজ তুলেছেন। বিজেপি ওখানে গিয়ে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে গুন্ডামি করেছে। পুলিশের উপর আক্রমণ করেছে।’ তবে রাজ্য পুলিশের বিশেষ পুলিশ টিম এদিন সন্দেশখালিতে আছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা সন্দেশখালি যান। কলকাতা হাইকোর্ট ১৪৪ ধারা বাতিল করতেই অধীর চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ এখানে দেখাচ্ছে যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা নিচ্ছে। আর সন্দেশখালির আপদগুলিকে ধরতে পারে না।’
অন্যদিকে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা তুলে এদিন ক্ষোভপ্রকাশ করেন অধীর। হুগলি জেলায় আরামবাগে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে যান, এই ঘটনায় যারা জড়িত তারা সবাই গ্রেফতার হয়েছে। কাউকে ছাড়া হচ্ছে না। ওখানে অশান্তি করার ক্ষেত্রে যারা প্ররোচনা দিয়েছে এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সবাইকেই গ্রেফতার করা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা বললেও বিরোধীরা সন্দেশখালিকে লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় ইস্যু করতে চাইছে। তাই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নয়াদিল্লি গিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী এবং কৌস্তভ বাগচী গণেশ পুজোকে সামনে রেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: আবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মেয়র ফিরহাদ হাকিম, হঠাৎ অসুস্থতার কারণ কী?
এছাড়া গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন অধীর চৌধুরী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আপনি নিজে একবার যান। আপনি তো একজন মহিলা। আপনি ওখানে গিয়ে মহিলাদের কাছে শুনুন। কেমন করে আপনার দলের লোকেরা অত্যাচার চালিয়েছে তাঁদের উপর। তাঁদের মুখ থেকে গিয়ে শুনে আসুন।’ সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সিপিএম–বিজেপি নেতৃত্ব। বসিরহাট পুলিশ সুপার অফিস ঘেরাও কর্মসূচি নেয় বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সন্দেশখালি যান। আর শান্তির বার্তা দেন।