বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর আঁতাদের অভিযোগ তুলে বহুবার সরব হয়েছে শাসক দল। এরই মধ্যে একটি স্কুলের দশম শ্রেণির পরীক্ষার প্রশ্নে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ একটি প্রশ্নে শুভেন্দু এবং নওশাদের যৌথ ব্যবসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। সেই প্রশ্নটি কার্যত ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও ওই প্রশ্নে দুজনের নামের পাশে কোন পদবী ব্যবহার করা হয়নি। তবে এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই প্রশ্ন নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন: বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘুমান মুখ্যমন্ত্রী, দাবি শুভেন্দুর
কী রয়েছে প্রশ্নে?
প্রশ্নে লেখা রয়েছে, ‘শুভেন্দু এবং নওশাদ যথাক্রমে ১৫০০ এবং ১০০০ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। এক বছর পর ব্যবসায় ৭৫ টাকা ক্ষতি হলে শুভেন্দুর কত ক্ষতি হবে? উত্তর কি হবে তা বেছে নিতে বলা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘৪৫ টাকা/ ৩০ টাকা/ ২৫ টাকা/ ৪০ টাকা।’ অর্থাৎ এই অঙ্কটিতে পড়ুয়াকে শুভেন্দুর ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে বলা হয়েছে। আর এই নিয়ে তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক। কারণ একজন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আর একজন বিরোধী দলের একজন বিধায়ক। অতীতে তৃণমূল শুভেন্দুর সঙ্গে নওশাদের আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সরব হতে দেখা গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী এবং নওশাদকে। কখনও তাঁদের বিরুদ্ধে শাসকদল সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে আবার পালটা শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। ঠিক সেই মুহূর্তে স্কুলের পরীক্ষায় এমন প্রশ্নপত্র কার্যত ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জানা গিয়েছে, ওই প্রশ্নপত্রটি হল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ১ নং ব্লকের গোকুলনগর পঞ্চায়েতের মহেশপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির অঙ্কের। ওই প্রশ্নপত্রে শুভেন্দু এবং নওশাদের নাম যৌথভাবে রয়েছে। দুই জনপ্রিয় নেতার নাম প্রশ্নপত্র লেখায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। যদিও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস দাস জানিয়েছেন, ‘এটা আমাদের স্কুলের প্রশ্নপত্র। এখনও পরীক্ষা হয়নি। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। তবে পরিবর্তন করা হবে।’ একই সঙ্গে যারা এই প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন সেই দুইজন শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। স্কুলের গণিতের শিক্ষক দাবি করেছেন, তিনি যে প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন তার সঙ্গে এই প্রশ্নের কোনও মিল নেই।
এর প্রতিক্রিয়ায় নওশাদ বলেন, ‘আমি প্রশ্নটি দেখেছি। যদি কেউ অনিচ্ছাকৃতভাবে এটি করে থাকে তাহলে কিছু বলার নেই। তবে জেনে বুঝে এই প্রশ্নপত্র করে থাকলে জানতে হবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। তবে এতে আমার কোনও মাথা ব্যাথা নেই।’ অন্যদিকে, বিজেপির তমলুক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘তৃণমূল বাচ্চাদের মধ্যেও রাজনীতি ঢুকিয়ে দিচ্ছে।’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও এর সমালোচনা করেন।