রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, বামপন্থীরা সবাই খারাপ নন। সিপিআইএমের ভোটেই তিনি নন্দীগ্রাম থেকে জিতেছেন। সুতরাং রাম–বাম জোট বা আঁতাত স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর কথায়। এছাড়া নন্দকুমার থেকে মহিষাদল একাধিক সমবায় নির্বাচনে জোট করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল রাম–বাম। এমনকী পূর্ব মেদিনীপুরের বহু জায়গায় এমন জোট করেও তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে পারেনি তারা। তবে এবার ম্যাজিক জয় পেল সিপিআইএম। তাও সমবায় ভোটে। সেখানে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়ল না লালপার্টি। তবে হারল তৃণমূল কংগ্রেসও। ভগবানপুরের কৃষি সমবায় সমিতির নির্বাচনে জয়ের লাল পতাকা উড়ল।
ঠিক কী ঘটেছে ভগবানপুরে? একুশের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জিতেছে বিজেপি। অন্যান্য সমবায়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ফলও ভাল। তবে কলাবেড়িয়া কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে দেখা গেল বামেদের জয়জয়কার। রবিবার এই নির্বাচনের ফলে চাপে পড়ে গেল বিজেপি। কারণ এখানে নয় জিতছে তৃণমূল কংগ্রেস, নয় জিতছে সিপিআইএম। অথচ এটা নিজের গড় বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। সুতরাং পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ফলাফল বিজেপির ভোটবাক্সে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? কলাবেড়িয়া সমবায়ে মোট ৯টি আসন। বিজেপি এখানে প্রার্থী দিতে পারেনি। একানে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের শতাংশ বেড়েছে। তবে ৯টি আসনই গিয়েছে বামের প্রার্থীরা। এই বিষয়ে কলাবেড়িয়া সমবায় সমিতির বিদায়ী সম্পাদক পিনাকীরঞ্জন দাস বলেন, ‘আমরা বিপুল ভোটে জিতেছি। অসংরক্ষিত আসনে ৬ জন, মহিলা সংরক্ষিত আসনে ২ জন, তফশিলি জাতি উপজাতি আসনে ১ জন জয়ী হয়েছি। আমাদের মহিলা সংরক্ষিত আসনে সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছে। সকলে আমাদের উপর ভরসা রেখেছেন।’
ঠিক কী বলছে বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেস? এই ফলাফল নিয়ে বিজেপির জেলা সহ– সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘ওখানে নতুন কোনও সদস্যকে নেওয়া হয়নি। ওই সমবায় সমিতি বাম আমল থেকে বামপন্থীদের নিয়েই চলছে। ওটা একটা ছোট সমবায় সমিতি। তাই ওটাকে গুরুত্ব দেয় না কেউ।’ আর কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস বলেন, ‘কলাবেড়িয়া কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ভোট ছিল। এটা আসলে বহু বছর ধরে বামেদের হাতেই। একই পরিবারের সদস্যরা ভোটার হয়ে থাকে। বাবা, মা, ছেলে, বৌমা সকলেই ওদের ভোটার। তাই ফল খারাপ হয়েছে। তবে এই নিয়ে সমস্যার কিছু নেই। গত নির্বাচনের তুলনায় এবার নির্বাচনের শতাংশ বেড়েছে।’