‘চোর-ডাকাত’ মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হল। চিঠি পাঠানো হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কাছে। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে ইমেল করেছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন। ওই সংগঠনের হুঁশিয়ারি, যদি প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ না গ্রহণ করা হয়, তাহলে সপ্তাহদুয়েক পরই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হবে।
গত ২৯ মার্চ রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে ডিএ আন্দোলনকারীদের যে আক্রমণ করেছিলেন, তার প্রতিবাদে শনিবার (১ এপ্রিল) হেয়ার স্ট্রিট থানায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে কনফেডারেশন। বুধবার কনফেডারেশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘স্বৈরাচারী মুখ্যমন্ত্রীর অগণতান্ত্রিক ও আইনবিরোধী বক্তব্যের বিরোধিতা করে এবং ৭ লাখ সরকারি কর্মচারীদের অপমান করার জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় ও কলকাতা পুলিশ কমিশনারের অফিসে গত ১ এপ্রিল ও ৩ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানানো হয়েছে।’
হেয়ার স্ট্রিট থানায় যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা নিয়ে কনফেডারশনের তরফে মুখ্যসচিবকে ইমেল করা হয়েছে। মমতার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করারও আর্জি জানিয়েছে কনফেডারশন। বিষয়টি নিয়ে কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর দায়ের করছে কিনা বা রাজ্য প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে কিনা, তার জন্য সপ্তাহদুয়েক অপেক্ষা করা হবে। তারপর আর কোনও সময় নষ্ট করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পথে হাঁটবে কনফেডারেশন।
ঠিক কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী?
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) এবং কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদানের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যখন শহিদ মিনারে আন্দোলন করছেন, তখন কয়েকশো মিটার দূরে মমতা বলেছিলেন, ‘প্রতিদিন আপনারা এখানে গিয়ে এই চাই, ওখানে গিয়ে ওই চাই (করে বেড়ান)। চোর-ডাকাতগুলো। যে চোর-ডাকাতগুলোর লিস্ট....(কথা শেষ করার আগেই শশী পাঁজার থেকে তালিকা চেয়ে নেন)। এমনিতে চিরকুটে চাকরি পেয়েছিল। সব গিয়ে বসে আছে ওখানে, ডিএয়ের ওখানে। তাঁদের কাছে আমায় জ্ঞান শুনতে হবে। জ্ঞানদাতারা, চোরেরা, ডাকাতরা, ডাকাত সর্দাররা।’
সেই মন্তব্যের প্রতিবাদে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) ১২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। যে সংগঠনের তরফে ইতিমধ্যে আগামী ১০ এপ্রিল এবং ১১ এপ্রিল দিল্লিতে অবস্থান-বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। ধর্মঘটেরও ইঙ্গিত দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)