সকাল থেকে ট্রেন্ড বলে দিচ্ছিল ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের লড়াই হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস বনাম বিজেপির মধ্যে। মাঝে কিছু নেই। যদিও উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। বাম–কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হন ঈশ্বরচন্দ্র রায়। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগে এটুকুই বোঝা গেল, বাম–কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক আবার ট্রান্সফার হয়েছে বিজেপিতে। এখন তৃণমূল কংগ্রেস জয়ের পথে এগিয়ে রয়েছে বলেই খবর। সেখানে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে বলেই জানা যাচ্ছে। পাল্টে যেতে পারে ফল যে কোনও মুহূর্তে। তবে বাম–কংগ্রেস জোট গড়েও ধূপগুড়িতে কোনও প্রভাব ফেলতে পারল না। তাই অনেকে বলছেন, স্বয়ং ঈশ্বরও জেতাতে পারল না।
এদিকে একের পর এক রাউন্ডে দেখা যায়, বিজেপি কখনও এগিয়ে যাচ্ছে। আবার তৃণমূল কংগ্রেস কখনও এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে বাম–কংগ্রেস জোট প্রার্থী দাগ কাটতেও পারেননি। সপ্তম রাউন্ড গণনার শেষে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায় পেয়েছেন ৬২ হাজার ৬০২টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায় পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৮২৯টি ভোট। আর কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায় পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ২২৯টি ভোট। অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ৩৭৭৩টি ভোটে এগিয়ে আছেন। একুশের নির্বাচনে ধূপগুড়ি আসনে জিতেছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপদ রায়। তাঁর অকাল মৃত্যুতেই সেখানে উপনির্বাচন হয়।
অন্যদিকে এখনও জোর টক্কর চলছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে। অবশেষে জয়ের হাসি হাসলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়। প্রায় ৪ হাজারের মতো ভোটে বাকিদের পরাস্ত করেছেন তিনি। একুশের নির্বাচনে ধূপগুড়িতে মেরুকরণ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এবার তা খাটল না। মানুষের ধারণার বদল ঘটেছে। সম্প্রতি বাংলায় আরও একটি উপনির্বাচন হয়েছিল। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে জিতেছিলেন বাম–সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। তবে পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তাই বামেরা ভেবেছিল সাগরদিঘির সেই ধারা ধূপগুড়িতে বজায় থাকবে। কিন্তু দেখা গেল বিশাল শূন্যতা।
আরও পড়ুন: রাজভবনের সামনে অবস্থানে প্রাক্তন উপাচার্যরা, চলছে তুমুল বিক্ষোভ–প্রতিবাদ
আর কী জানা যাচ্ছে? ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের চরিত্র আলাদা। তাই আগে থেকে ধরে নিলে যে হবে না সেটা ফলাফলেই স্পষ্ট। বিজেপি এখানে লড়াই দিলেও অবশেষে হারের মুখ দেখতে হল। ২০১১ সালে এখানে সিপিএমের মমতা রায় শেষবার জিতেছিলেন। তখন সিপিএম পেয়েছিল ৪২ শতাংশ ভোট। কিন্তু পালাবদলের পর থেকে ধূপগুড়িতে সিপিএমের ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়েছে। ২০১৬ সালে তারা ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল এখানে। তখন দেখা যায়, সিপিএমের একটা বড় অংশের ভোট চলে যাচ্ছে বিজেপিতে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দেখা যায়, সিপিএমের ভোটই চলে গিয়েছে বিজেপিতে। এবার প্রত্যাবর্তন হল না। হল পরিবর্তন।