কাকিমার কাছ থেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুনতে হয়েছিল সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা তরুণীকে। এরপর তরুণীকে নিয়ে সালিশি সভাও বসে। সেখানে কাকিমার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন তরুণী। সারা রাত নিখোঁজ থাকার পর পাওয়া যায় তরুণীর দেহ। প্রশ্ন উঠছে, মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় অপমানিত হয়েই কি আত্মহত্যার পথে বেছে নিয়েছে সে।
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে শৌলান গ্রামে। আত্মঘাতী তরুণী মণিদীপা মণ্ডলের বাবা অমল মণ্ডল ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, ‘গত ২৭ জুন সন্ধ্যায় পরবর্তী পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছিল আমার মেয়ে। তখনই ওই বন্ধুটির সঙ্গে প্রেমের বদনাম দিয়ে নানা অকথা, কুকথা বলতে শুরু করেন ওর কাকিমা ঝুমা। বন্ধুটি চলে যাওয়ার পর সেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ বন্ধ হয়নি। এরপর আমার মেয়ে প্রতিবাদ করে উঠলে ঝুমার গলার স্বর আরও চড়তে থাকে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এই ঘটনার রেশ থেকে যায় পরের দিনও। আমার মেয়েকে বেশ কয়েকজন অচেনা যুবক হুমকিও দিয়ে যায়।’
জানা যায়, গত ২৯ জুন রাতে মণিদীপা ও তাঁর মাকে সালিশি সভায় ডেকে পাঠানো হয়। জোর করেই তাঁদের সালিশি সভায় আসতে বাধ্য করানো হয়। স্থানীয় তৃণমূলের পার্টি অফিসেই সভা হয় বলে জানা যায়। সালিশি সভায় মণিদীপা জানায়, তাঁর কোনও দোষ নেই। মিথ্যা তাঁর নামে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মেয়েটির কোনও কথাই শুনতে চাওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত মেয়েটিকে কাকিমার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানো হয়। ২৯ তারিখের ওই ঘটনার পর সেই রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল মণিদীপা। তারপর ৩০ জুন ভোরে গ্রামে রাস্তার মাঝখানে পাওয়া যায় তার দেহ।
ইতিমধ্যে সেদিনের সালিশি সভায় উপস্থিত সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মণিদীপার বাবা। পুলিশ কাকিমা ঝুমা মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে গোটা বিষয়টিতে স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েতের নাম জড়িয়ে গেলেও পঞ্চায়েত সদস্য বাবলু দাস অবশ্য পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।