সম্প্রতি জঙ্গলমহলে স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে। তার ওপর পড়ুয়াদের অনুপস্থিতির হারও বেড়েছে। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের স্কুলমুখি করতে তৎপর হয়েছে শিক্ষা দফতর। জঙ্গলমহলে স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের জন্য চালু করা হচ্ছে আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম। সে ক্ষেত্রে স্কুলছুট হতে পারে এরকম কোনও পড়ুয়াকে আগে থেকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা রয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়ে স্কুলছুট রোখা যাবে বলে মনে করছে শিক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন: স্কুল পড়ুয়াদের আধার কার্ড করতে বুধবার থেকে জেলায় জেলায় শিবির
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও পড়ুয়া স্কুলছুট হতে চলেছে তা আগে থেকে কিছু লক্ষণ বোঝা যায়। যেমন মাঝেমধ্যে কামাই করা বা একেবারে পিছনের বেঞ্চে বসা। এই সমস্ত কিছু দেখলেই বোঝা সম্ভব যে পড়ুয়া স্কুল ছুট হতে চলেছে কি না। ইতিমধ্যে কীভাবে এই ব্যবস্থা পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে গাইডলাইন ঠিক করা হয়েছে। তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলার দায়িত্ব শিক্ষা অধিকারিকদের কাছে। প্রথমে জঙ্গলমহল অঞ্চলে এটি চালু করা হচ্ছে। সফল হলে পরবর্তীকালে অন্যান্য জেলাতে এটি চালু করা যেতে পারে। জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া জেলায় জঙ্গলমহল অঞ্চলে ৪৯ হাজার ছাত্রছাত্রী দশম শ্রেণিতে স্কুল ছেড়ে দিয়েছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়া, অথবা কোনও পড়ুয়া ১৫ দিনে একদিন বা মাসে একদিন স্কুলে গেলে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
আবার সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের দেখা গিয়েছে, তারা নির্দিষ্ট সময় স্কুলে যাচ্ছে না। তাদের শিক্ষার জন্য মূল্যবান সময় হারাচ্ছে। স্কুল শিক্ষা দফতরের লক্ষ্য হল পড়ুয়াদের স্কুলমুখি করে তোলা। কীভাবে পড়ুয়াদের স্কুল ছুট হওয়া বোঝা যাবে সে বিষয়ে মানদণ্ড ঠিক করা হয়েছে। কোনও পড়ুয়া ৫ দিন বা ১ মাসে ৭ দিন অনুপস্থিত থাকা সেই সমস্ত বিষয়ের দিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। সাধারণত স্কুলে অনুপস্থিত থাকার পাশাপাশি স্কুলের বিভিন্ন কর্মসূচি অংশ গ্রহণ না করার ইচ্ছা, পারিবারিক সমস্যা বা অনেকেই আবার নেশাগত কারণে বা সহপাঠীদের দ্বারা অপদস্ত হওয়ার কারণে স্কুল ছাড়ে। সে ক্ষেত্রে প্রতি ক্লাসে দুটি পড়ুয়ার জুটি তৈরি করতে বলা হয়েছে।
যদি কোনও পড়ুয়া স্কুলের অনিয়মিত থাকে তাহলে তারা বাড়ি গিয়ে কারণ জানবে এবং পরে শিক্ষকদের জানাবে। তিন দিন পর পর উপস্থিত না থাকলে শিক্ষকদের তা জানতে হবে। আবার এক মাসে ১০ দিনের বেশি সদস্য অনুপস্থিত থাকলে স্কুল পরিচালনা সমিতির সদস্যরা ও শিক্ষকদের যৌথভাবে ছাত্রের বাড়ি যেতে হবে। আবার কম বয়সে বিয়ের কারণে স্কুল ছুট হয়ে থাকে। সে বিষয়টিও বোঝানো হবে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে স্কুলগুলিকে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। এর জন্য মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে।