টানা ১৭ ঘণ্টার অভিযানের পর গতকাল গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যকে। বালু ঘনিষ্ঠ সেই নেতাকে গ্রেফতার করে বাড়ি থেকে বের করে আনার সময় ফের একবার আক্রান্ত হয় ইডি। অভিযোগ, আঢ্যকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় ইডি আধিকারিকদের লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল ইট। এই আবহে ইডির গাড়ির কাচ ভেঙেছে। অভিযোগ, মহিলাদের সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখিয়ে ইডির গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেন শংকর আঢ্যর অনুগামীরা। এরপর ধৃত তৃণমূল নেতা ও দু'জন ইডি অফিসারকে নিয়ে কোনওক্রমে এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যায় সেই গাড়ি। এদিকে সেই গাড়ির পিছনে ইডির আরও একটি গাড়ি ছিল। সেই গাড়ির কাচ ভাঙে তৃণমূল কর্মীদের ইটবৃষ্টিতে। (আরও পড়ুন: নিজের শক্তি বুঝেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট আলোচনা, জেলায় জেলায় সমীক্ষা চালাবে কংগ্রেস)
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে ম্যারাথন তল্লাশি চলে বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন পৌর প্রধানের বাড়িতে। এরপর রাত ১২টা ৩২ মিনিট নাগাদ শংকর আঢ্যকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বের করে আনেন ইডি আধিকারিকরা। এদিকে তাঁকে ইডি বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁর অনুগামীরা। এমনকী ইডির গাড়ি লক্ষ্য করে ইটও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বনগাঁ থানার পুলিশ। এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিআরপিএফ জওয়ানরাও লাঠিচার্জ করে বলে জানা যায়।
এদিকে শংকরকে রাতেই সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছ বলে জানা গিয়েছে। আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার শংকর আঢ্যর শ্বশুরবাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সেখান থেকে উদ্ধার ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। এদিকে শংকরের অধীনে কাজ করা অঞ্জন মালাকারের বাড়িতেও ইডি হানা দিয়েছিল। তল্লাশি চালানো হয় শংকরের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের বাড়িতে। আঢ্যর সহযোগী বাবলু দাসের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি।
এর আগে শুক্রবার দিনভর রাজ্য রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে ছিল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ঘটনা। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিকরা। এই নিয়ে এক বিবৃতি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, ৮০০ থেকে ১০০০ জনের জনতা ইডির তদন্তকারী অফিসারদের ঘিরে ধরে। ইডির দাবি, অফিসারদের খুনের উদ্দেশেই সেখানে উপস্থিত হয় জনতা। ঘটনায় ইডি তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে অফিসারদের বিরুদ্ধে মারধরে উস্কানি দেওয়ার সন্দেহ প্রকাশ করেছে।