উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে টিম পাঠিয়েছেন। তবে উত্তরবঙ্গের এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য ভুটানকে দায়ী করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি দুষ্মন্ত্য নারীওয়ালা এবং সেচ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ওঙ্কার সিং মীনা। উত্তরকন্যায় উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলাশাসক এবং পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী। আবার দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলা প্রশাসন, সেচ দফতরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সারেন মন্ত্রী।
এদিকে গাজোলডোবা পরিদর্শন করে ফেরার সময় সেচমন্ত্রী দেখেন, প্রবল বর্ষার জেরে কালভার্ট ভেঙে রাজগঞ্জ ব্লকের হদুগছ এবং যাত্রাপাড়ার মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ। তখন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘কোনওরকম তথ্য ও যোগাযোগ ছাড়াই জল ছাড়ছে ভুটান। যার জেরেই এই বানভাসী পরিস্থিতি। ভুটানের জল ছেড়েছে বলেই ডুয়ার্সের রায়ডাক, সঙ্কোশ, বাসরা, কালজানি, জয়ন্তী ও তোর্সা নদীতে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। তাই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ তিস্তা ব্যারেজও পরিদর্শন করেন সেচমন্ত্রী। সেখান থেকে চলে আসেন উত্তরকন্যায়। আর পাঁচ জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। তারপর আলিপুরদুয়ার রওনা দেন।
অন্যদিকে আজ,মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার যান। সেখানে সেচমন্ত্রী জানান, মানুষ যেসব জায়গায় সমস্যায় পড়েছেন সেগুলি চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। কাজও শুরু হয়েছে। কোচবিহারের ৪৮টি জায়গার ক্ষতি হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে ১৩টি জায়গা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেখানেও কাজ শুরু হয়েছে। সেচমন্ত্রীর কথায়, ‘ভুটানের জল আলিপুরদুয়ারের উপর এসে পড়ে। এই সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রী বহুবার কেন্দ্রকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি। ভুটান না জানিয়েই জল ছাড়লে তার প্রভাব তো পড়বেই। এটা তো আর রাজ্যের বিষয় নয়। ভুটান আগে থেকে জানলে পদক্ষেপ করা যেত।’
আরও পড়ুন: বিজেপিকে না সরালে দেশের সার্বভৌমত্ব ধরে রাখা যাবে না, বৈঠকে সপ্তমে সুর মমতার
কেমন করে মোকাবিলা করা হবে? মানুষের সাহায্যে সেচমন্ত্রী কিছু ব্যবস্থা করেছেন। তাই তিনি জানান, তাঁরা বৃষ্টি মাপার জন্য মেশিন বসাচ্ছেন। তবে বানারহাট এবং জলপাইগুড়ি খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। চাষবাসের তেমন ক্ষতি হয়নি। বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ জেলাশাসকদের কাছে আছে। যা মানুষজনকে দেওয়া হবে। সাংবাদিক বৈঠক করে সেচমন্ত্রী বলেন, ‘এখন হঠাৎ করে হড়পা বান এলে বিপদ হবে। জলমগ্ন এলাকাগুলিতে জল কমেছে। মানুষের সমস্যা থাকলে সেটা আমরা দেখছি। সব রিপোর্টই যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।’ তবে সেচমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘আগে তো বামফ্রন্ট সরকারকে দোষারোপ করতেন। মুখ্যমন্ত্রী বলতেন, ম্যান মেড বন্যা। এখন তো তাঁরাই সরকারে আসীন। আর উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ। এখন আবার কেন্দ্রীয় সরকার ও ভুটান সরকারের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।’