পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হল ফুরফুরা শরিফে। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল আইএসএফ বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেস বেআইনিভাবে বোর্ড দখল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলে ফুরফুরায় পুলিশের সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়িয়ে পড়েন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। এমনকী আইএসএফ কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।সূত্রের খবর, বোমাবাজির ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হলে তা থামাতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। অশান্তির মধ্যে বাতিল হয়ে গেল বোর্ড গঠন। আজ বোর্ড গঠন হবে না বলে জানিয়ে দিলেন বিডিও।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আইএসএফ এবং সিপিএম। তাই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, গোটা বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন। তাই বোর্ড গঠন সম্ভব নয়। ফুরফুরা শরিফে গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করার কথা আজ জানিয়েছিল প্রশাসন। তাই সেখানে হাজির ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যরা। ফুরফুরা শরিফের গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৯টি আসনের মধ্যে ২৪টি আসন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আইএসএফ ও সিপিএম পেয়েছে ৫টি আসন। অভিযোগ, যেহেতু তারা বোর্ড গঠন করতে পারছে না তাই অশান্তি করতে শুরু করে। ফুরফুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের জেলা পরিষদের সদস্য শামীম আহমেদ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাতে পঞ্চায়েত অফিসে তালা দিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সারারাত বোমাবাজি চলে। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বোর্ড গঠন নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? অন্যদিকে পুলিশ এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে পঞ্চায়েত অফিসের তালা খুলে দেয়। তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকটি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ এনেছেন অনেকে। এদিন এখানে পর পর কয়েকটি বোমা ফাটে। পঞ্চায়েত অফিসের সামনে এমন ঘটনা ঘটায় আতঙ্ক তৈরি হয়। এরপরই পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তখন এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। এইসব মিলিয়ে রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ফুরফুরা শরিফ। আর ভয়ে বন্ধ হয়ে যায় এলাকার দোকানপাঠ এবং বাজারহাট।
আরও পড়ুন: আবার দার্জিলিংয়ে রোপওয়ে চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার, আট বছর বন্ধ ছিল
আর কী জানা যাচ্ছে? এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। এমনকী বচসার সময়ে এক পুলিশকর্মীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেন নওশাদ সিদ্দিকী। এই ঘটনা নিয়ে বচসা আরও তীব্র হতে থাকে। এক পুলিশকর্মীর দিকে আঙুল উঁচিয়ে নওশাদ বলেন, ‘আপনার বাঁদরামি আমি ছুটিয়ে দেব।’ তখন পাল্টা পুলিশকর্মীও প্রতিবাদ করে বলেন, ‘বাঁদরামি কী হয় দেখা যাবে। আপনাকে তুই করে বলার অধিকার কে দিয়েছে?’ এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন হয় এবং অশান্তির সঙ্গে যুক্তদের এলাকা থেকে হঠিয়ে দেওয়া হয়।