আবহাওয়ার মতোই ক্ষণে ক্ষণে বদলায় পাহাড়ের রাজনীতি। কুয়াশা ঘেরা পাকদন্ডী পেরলেই ঠিক কী অপেক্ষা করে আছে তা আগে থেকে আঁচ করা যায়না। একটা সময় জিএনএলএফকে টপকে দার্জিলিং পাহাড়ে ধূমকেতুর মতো উঠে এসেছিলেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। তাঁর একটা নির্দেশে রাস্তায় নেমে আসতেন জনতা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই পাহাড়েই গুরুং জমানার অবসানের ঘণ্টা বাজিয়ে দিল এবারের জিটিএ নির্বাচনের ফলাফল।
সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আগামী দিনে গুরুং কি তবে তাঁর প্রাক্তন শিষ্য অনীত থাপার কাছে আত্মসমর্পণ করবেন? অন্যদিকে অনীত থাপার সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। সেক্ষেত্রে পাহাড়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে তৃণমূলও।
এবারের জিটিএ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে অনীত থাপার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা পেয়েছে ২৭টি আসন। তৃণমূলও খাতা খুলেছে পাহাড়ে। তৃণমূলের দখলে ৫টি আসন। বামেরা একটি আসনও পায়নি। অজয় এডওয়ার্ডের দল হামরো পার্টি জিতেছে ৮টি আসনে। নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন ৫টি আসনে।
এবার প্রথম থেকেই জিটিএ নির্বাচন নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং। এনিয়ে অনশনেও বসেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিটিএ নির্বাচন হয়েছে। তবে মোর্চার তরফে সরাসরি কোনও প্রার্থী দেওয়া হয়নি। এমনকী ভোটও দেননি বিমল গুরুং। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে পাহাড়ে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক মাটি পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন গুরুং। কিন্তু সেখানেও ডাহা ফেল করলেন তিনি।
বনধের রাজনীতি নয়, শান্তি আর উন্নয়নের পক্ষেই রায় দিলেন পাহাড়ের মানুষ। তবে বিমল গুরুং এদিন বলেন, যারা ক্ষমতায় আসছে তাদের অভিনন্দন। তবে এটা স্থায়ী সমাধান নয়। স্থায়ী মঙ্গলের জন্য নয়। সাময়িক ব্যাপার। পাহাড় ডুয়ার্সের মঙ্গলের জন্য় কাজ চালিয়ে যাব।