‘মায়ের জ্বর’ এতটুকুই বলতে শিখেছে সে। আর তার বেশি বলতে পারবেই বা কী করে? বয়স তো মেরেকেটে ২টো বছর। এই বয়সেই নিজের গায়ের জামা খুলে টিউবওয়েল পাম্প করে ভিজিয়ে মায়ের মাথায় চেপে ধরছে সে। কারণ, ‘মায়ের জ্বর’।
শুক্রবার এই দৃশ্য জলপাইগুড়ির কোতয়ালি থানা চত্বরের। শিশুটি যখন মায়ের সেবার ব্যস্ত তখন চারদিকে ঘিরে রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। রয়েছেন থানায় আসা কয়েকজন। কিন্তু সাহায্য করতে এগিয়ে যাচ্ছেন না কেউ। কারণ, ‘মায়ের জ্বর।’
জ্বর মানেই এখন আতঙ্ক। এই বুঝি ছোবল দেয় করোনা! তাই উদোম গায়ে জ্বর সারাতে মায়ের মাথায় জল ঢালল একরত্তি। কিছুক্ষণ বাদে জলপাইগুড়ি পুরসভার কর্মীরা এসে তাঁদের সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান।
জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি শহরে পরিচারিকার কাজ করতেন রেখা সরকার। করোনার জেরে কাজ গিয়েছে। আগেই স্বামী তাঁকে ছেড়ে অন্য ঘর বেঁধেছিলেন। কাজ হারানোয় তাই ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই হয় পথে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছেলেকে নিয়ে রাত কাটাতে থাকেন তিনি। দিনকয়েক ছিলেন কোতয়ালি থানার প্রতীক্ষাগারে। সেখানেই অনিয়মে জ্বর আসে তাঁর।
খবর পেয়ে মহিলার খাবারের ব্যবস্থা করেন পুলিশকর্মীরা। খবর পেয়ে সেখানে আসেন পুরসভার প্রশাসক সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মহিলার দুর্দশা দেখে চোখে জল ধরে রাখতে পারছিলাম না। ওঁকে আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ছেলের সঙ্গে যতদিন খুশি থাকতে পারেন তিনি।