গতকাল সন্দেশখালি যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেতারা। এক শিখ আইপিএস অফিসার সেখানে শুভেন্দুদের আটকেছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় বিজেপি নেতারা সেই আইপিএস অফিসারকে 'খলিস্তানি' আখ্যা দিয়েছিলেন। পরে সেই বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি নেতা দাবি করেন, তারা অন্য ধর্মকে আঘাত করে কিছু বলেননি। তবে এবার অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী নিজেও নাকি আইপিএস জসপ্রীত সিংকে 'খলিস্তানি' আখ্যা দিয়েছিলেন। এক পঞ্জাবি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইপিএস অফিসার নিজেই শুভেন্দুর নামে এই অভিযোগ করেছেন। আর সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন সাংবাদিক মহম্মদ জুবায়ের। জুবায়েরের সেই পোস্ট শেয়ার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। (আরও পড়ুন: বাংলার 'খলিস্তানি' বিতর্কের আঁচ পঞ্জাবে, BJP-র বিরুদ্ধে সুর চড়ল অমৃতসরের গুরুদ্বারে)
এদিকে গতকাল রাতে নরেন্দ্র মোদীর পাগড়ি পরিহিত একটি ছবি পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারীকে খোঁচা দিয়ে কুণাল ঘোষ লিখেছিলেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কি খলিস্তানি? উল্লেখ্য, গতকাল সন্দেশখালি যাওয়ার পথে ধামাখালিতে এক শিখ পুলিশ অফিসারের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ ওঠে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, আইপিএস অফিসার জসপ্রীত সিংকে 'খলিস্তানি' বলেন বিজেপি নেতারা। এর জেরে সেই অফিসারকেও ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা গিয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই নিয়ে টুইট করেন। বিতর্কের মাঝে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করে গেরুয়া শিবির। এই বিতর্কের মাঝেই অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী পালটা দাবি করেছেন, 'এই ধরনের মন্তব্য করি না। এই ধরনের কথা বলাকে আমরা কোনওভাবেই সমর্থন করি না। তিনি নিজের নম্বর বাড়ানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অসত্য তথ্য পরিবেশন করেছেন। আমরা কোনও ধর্মকে আক্রমণ করে কোনও দিন কিছু বলিনি, কোনওদিন কিছু বলবও না।'
এদিকে এই ঘটনায় এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, 'এক জন পাগড়ি পরেন বলে তিনি খলিস্তানি? পুলিশে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান সবাই আছেন। সবাই তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন। এই ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করে। বিরোধী দলনেতা জসপ্রীত সিংকে খলিস্তানি বলেছেন। এটা অসংবেদনশীল, প্ররোচনামূলক ও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেছে। এর নিন্দা করছি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫(এ) ধারায় আইনত পদক্ষেপ করা হবে।' এদিকে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, 'আমাদের এক অফিসারকে খলিস্তানি বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেই ভিডিয়ো শেয়ার করে আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছি। তাঁর দোষ একটাই, তিনি এক জন গর্বিত শিখ এবং একই সঙ্গে এক জন যোগ্য অফিসার, যিনি আইন কার্যকর করার চেষ্টা করছিলেন।'