শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গেল জগদ্দল শিল্পাঞ্চলের আরও একটি জুট মিল। শুক্রবার জগদ্দলের অ্যাংলো ইন্ডিয়া জুট মিল বন্ধের নোটিস জারি করে। তার জেরে কর্মহীন হয়ে পড়লেন কারখানার তিন হাজার জন শ্রমিক। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। তারা জুট মিলের গেটের বাইরে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরফলে স্বাভাবিকভাবেই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়লেন কারখানার শ্রমিকরা। বিষয়টি সমাধান চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। এবিষয়ে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে মালিকপক্ষকে দায়ী করেছেন সাংসদ।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর খুলে যাচ্ছে রিষড়ার ওয়েলিংটন জুট মিল, খুশি শ্রমিকরা
কেন জুট মিল বন্ধ করে দিল মালিকপক্ষ?
অভিযোগ, মিলের তাঁত বিভাগের শ্রমিকদের অন্য বিভাগে স্থানান্তরিত করছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরই প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে তাঁত বিভাগের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। শ্রমিকদের দাবি, তারা ১০-১২ বছর ধরে সেখানে কাজ করছেন। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে তাদের অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন শ্রমিকরা। কিন্তু, শ্রমিকদের বক্তব্য, তাদের দাবি না মানা হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। শ্রমিকদের বিক্ষোভ ঘিরে মিলের গেটে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতির সামাল দিতে মিলের গেটের বাইরে বিশাল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
শ্রমিকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে অর্জুন সিং জানান, মিল বন্ধের ঘটনা দুঃখজনক। মালিকপক্ষ তিন শিফটের বদলে দুটি শিফট করে দিয়েছে। কোনওরকম পরিকল্পনা না করেই শ্রমিকদের না জানিয়ে এরকম কাজের ক্ষেত্র বদলানো হলে স্বাভাবিকভাবেই শ্রমিকদের সমস্যা হবে। তিনি শ্রমিকদের সামনে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে উভয় পক্ষের বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। সে ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সমস্যার সমাধান না হলে তিনি নিজে এই সমস্যার সমাধানে উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বলবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শ্রমিক মালিক অসন্তোষের জেরে এর আগে ও বন্ধ হয়েছিল অ্যাংলো ইন্ডিয়া জুট মিলটি। গতবছরের ডিসেম্বরে অসন্তোষের জেরে উৎপাদন কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। সেক্ষেত্রে তাদের অভিযোগ ছিল, মালিকপক্ষ শ্রমিকদের উপর জুলুমবাজি করছে। তাদের উপর অত্যাধিক কাজের বোঝা চাপানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন জুট মিল বন্ধ থাকার পর অবশেষে উভয়পক্ষের বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়। তবে এবার জুটমিল বন্ধ করে দেওয়া হলেও শ্রমিকরা নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।