আবার নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার কথা শোনা গেল বিজেপি বিধায়কের গলায়। তিনি আবার এবারের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক। হ্যাঁ, তিনি মনোজ টিগ্গা। যিনি বাংলার নির্বাচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন। আগেও বহু বিজেপি নেতা এমন কথা বলেছেন। তবে এবার মনোজ টিগ্গা যা বলেছেন তা নিয়ে রীতিমতো রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তবে জবাব দিতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেসও। সুতরাং লোকসভা নির্বাচন শুরু আগেই বাতাবরণ তপ্ত হয়ে উঠছে। যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে ফেলে দিতে চান নিজে মুখেই বলছেন মনোজ টিগ্গা। আবার পরক্ষণেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিধায়কের কাছে ভোটও চাইছেন তিনি। এই দ্বিমুখী চরিত্র মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না বাংলার মানুষ বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। শনিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় ২৫টির বেশি আসনে জয়ী হলে ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই বিজেপি আন্দোলন করে ফেলে দেবে তৃণমূলের সরকারকে’। মনোজ টিগ্গার এই মন্তব্যকে ঘিরে ছড়িয়েছে বিতর্ক। টিগ্গার এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসও।
আরও পড়ুন: আরও বিপুল পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে বাংলায়, ডেডলাইন থাকছে ১ এপ্রিল
অন্যদিকে শনিবার দিনই আবার দেখা গেল, মনোজ টিগ্গা আলিপুরদুয়ার শহরের একটি চায়ের দোকানে বসে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন। বিজেপির টিকিটে জয়ী সুমন কয়েক মাস আগেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। চায়ের আড্ডার সময়েও সুমন কাঞ্জিলালের কাছে নিজের পক্ষে ভোট চান টিগ্গা। এই পর পর দুটি ঘটনা ঘটার পর শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব পাল্টা বলেন, ‘আলিপুরদুয়ারের মনোজ টিগ্গা আসলে সংবিধানের নিয়মকানুন জানেন না। তাই এমন অবাস্তব কথা বলছেন। আসলে এবারের লোকসভা নির্বাচনে অনেক ভোটে হারবেন বুঝেই এসব বলছেন তিনি।’
এছাড়া আলিপুরদুয়ার জেলা পার্টি অফিসে নানা কথা কান পাতলেই শোনা যায়। জন বারলাকে প্রার্থী করলে হার নিশ্চিত ছিল বলে মনে করেন বহু বিজেপি নেতা–কর্মীই। সেখানে মনোজ টিগ্গাকে দিয়ে লড়াই করা যাবে। ফলাফল পরে দেখা যাবে। এমন মতও অনেকের। সেখানে মনোজ টিগ্গা তাঁর দাবি নিয়ে বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় আমাদের দল ২৫–২৬টা আসনে জয়ী হলে তৃণমূল সরকার ২০২৬ সাল পর্যন্ত টিকবে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিজেপি ২৫টার উপরে আসন পেলেই মানুষ বাংলার তৃণমূল সরকারকে ফেলে দেবেন। মানুষের রায়কে হাতিয়ার করে বিজেপি আন্দোলন করবে।’ আর সুমনের সঙ্গে আড্ডা প্রসঙ্গে টিগ্গার বক্তব্য, ‘একজন প্রার্থী হিসেবে সবার থেকে ভোট চাওয়ার অধিকার আমার রয়েছে। সুমনদার থেকেও ভোট চেয়েছি।’ আর সুমন কাঞ্জিলালের কথায়, ‘মানুষ নিজে বিচার করবেন কাকে ভোট দেবেন। দলমত নির্বিশেষে একসঙ্গে আড্ডা দেওয়াটাও কিন্তু গণতন্ত্রের পক্ষে একটা ভাল দিক।’