তিনি ফিরলেন। কিন্তু ফিরেও ফিরলেন না। মাঝে পাঁচ বছরের বিরতি। তা কাটিয়ে বিধানসভা নির্বাচেনে জিতলেও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই জুটল না মদন মিত্রের। কামারহাটির সদ্য নির্বাচিত এই বিধায়কের নাম দেখা গেল না মন্ত্রিসভার নয়া তালিকায়।
রবিবার বিকেলে রাজভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে নতুন মন্ত্রীসভার তালিকা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের হাতে তুলে দেন তিনি। কিন্তু দেখা যায়, সেই তালিকায় নাম নেই মদন মিত্রের।
এবারের বিধানসভা ভোটে কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৩৫,৪০৮ ভোটে হারিয়ে তৃতীয়বারের জন্য বিধায়ক হন মদন। তারপর থেকেই তাঁর অনুগামীরা আশা করছিলেন, 'মদনদা'-কে মন্ত্রী করবেন দিদি। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিল তৃণমূলের নয়া মন্ত্রিসভার তালিকা।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বিষ্ণুপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআইএমের বিধায়ক রথীন সরকারের মৃত্যুর কারণে উপনির্বাচন হয়েছিল। উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্র তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের ইস্কান্দার হোসেনকে পরাজিত করে প্রথমবার বিধায়ক হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালেই তাঁকে প্রভাবশালী সিপিএম নেতা তথা কামারহাটির বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়েছিলেন। সেই বৈতরণীও পার করেন মদন। তারপর তাঁকে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিল তৃণমূল। সেইসময় ক্রীড়া দফতর নিয়ে মন্ত্রিসভায় কাজ শুরু করেছিলেনন তিনি।
২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে ক্রীড়ার পাশাপাশি পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মদন। এতদুর পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। তবে গোল বাঁধল ২০১৪ সালে। ওই বছরের ডিসেম্বরে চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করে। তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মদন। তার পর থেকে কারাবাসেই ছিলেন তিনি। তবে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলবন্দি মদনকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু সেই ভোটে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে জামিনে মুক্ত হয়েছিলেন মদন। ২০১৯ সালে ভাটপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে অর্জুন-পুত্র পবন সিংয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে পুনরায় হেরে গিয়েছিলেন মদন। চলতি বছরে আবারও মদনকেই কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী করা হয়। অবশেষে পাঁচ বছরের লম্বা বিরতির পর ফেরেন। তবে বিধি বাম। ফিরলেও অধরাই রয়ে গেল মন্ত্রিত্ব।