উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অশিক্ষিত, কিছু পারেন না, ভারতনাট্যম নেচে-নেচে শুধুমাত্র মঞ্চের উপরে কথা বলতে পারেন- এমনই কায়দায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেনজির আক্রমণ শানালেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দে তিনি বলেন, ‘উনি এতই অশিক্ষিত যে উনি আইনি-বেআইনি কিছুই বোঝেন না। উনি শুধু সংলাপ ....। যা পারেন, ভারতনাট্যম নেচে-নেচে মঞ্চের উপরে (কথা বলতে পারেন)।’
আর অভিজিৎ সেই মন্তব্য করেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের প্রেক্ষিতে মমতা বলেন যে ‘এই রায় বেআইনি।’ সেইসঙ্গে মমতা বলেন যে ‘বিজেপির কথায় এই রায় হয়েছে।’ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে রাজ্য সরকার। চাকরিহারা প্রার্থীদের পাশে থাকারও বার্তা দেন তিনি।
মমতার সেই মন্তব্যের রেশ ধরেই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানান হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী। মমতার নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেন। ওই সংবাদমাধ্য়মে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা। সম্পূর্ণ বাজে কথা। এই কথা যিনি বলেন, তিনি ভারতীয় নন। আপনারা খোঁজ নিন, তাঁর নাগরিকত্বে আসলে কোথাকার, তিনি কোথাকার নাগরিক।’ সেইসঙ্গে অভিজিৎ দাবি করেন, এসএসসি দুর্নীতির জন্য দায়ি মমতা। ‘ধেড়ে ইঁদুর’ এবং 'মাথা'-ও শীঘ্রই ধরা পড়বেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, যে এসএসসি মামলায় প্রায় ২৬,০০০ জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে, সেই মামলায় প্রথমবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০২১ সালের নভেম্বরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেই নির্দেশের ৩০ মাস পরে সোমবার হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ জানিয়ে দেয় যে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। যে রায়কে ঐতিহাসিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে একাধিক মহল।
যদিও হাইকোর্টের রায়ের জেরে জালি প্রার্থীদের পাশাপাশি তাঁরাও চাকরি হারিয়েছেন বলে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন যোগ্য প্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য, জালিয়াতি করলেন না অন্যরা। আর ফল ভুগতে হচ্ছে তাঁদের। তাঁরা তো কোনওরকম দোষ করেননি। তাঁরা নিয়ম মেনেই পরীক্ষা দিয়েছিলেন। নিয়ম মেনেই সবকিছু করেছিলেন। যদিও অভিজিতের বক্তব্য, ১৭ রকম পন্থায় দুর্নীতি হয়েছে। ফলে মুড়ি এবং মিছরি আলাদা করা যায়নি।