প্রায় সাড়ে তিন মাস পর জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যহতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাতে থাকা দুই দফতর তিনি দিয়েছেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা ও পার্থ ভৌমিককে। প্রশ্ন উঠছে, গ্রেফাতর হাওয়ার এত দিন পর কেন তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো?
আনন্দবাজার অনলাইনের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিবারের অনুরোধেই এই সিন্দান্ত নিয়ছেন মূখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে সম্প্রতি জ্যোতিপ্রিয় দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক দেখার তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা সঙ্গে। দীর্ঘ ক্ষণ তাঁরা কথা বলে। জ্যোতিপ্রিয় দাদা তাঁকে বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর জামিনের জন্য আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু মন্ত্রী থাকায় 'প্রভাবশালী' তকমা দিয়ে বারবার তাঁর জামিন আটকে দিচ্ছে ইডি। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে অব্যাহতি দিলে হয়তো জামিন পেতে সুবিধা হবে তাঁর।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন
সেই সময় প্রবীণ নেতা দেবপ্রিয়কে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই নিয়ে আবেদন জানাতে। সেই মতো, গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সময় চান দেবপ্রিয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কালিঘাটের বাড়িতে ডেকে পাঠান। তাঁর কাছে জ্যোতিপ্রিয়র দাদা বিষয়টি জানান। মমতা তাঁকে বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দেন।
এর ১৫ ফেব্রুয়ারি জ্যোতিপ্রিয়কে সরানোর সুপারিশের ফাইল যায় রাজভবনে। ১৬ তারিখ নবান্নের সুপারিশে সিলমোহর দেন রাজ্যপাল।
আরও পডু়ন। শেখ শাহজাহান কোনও অপরাধ করেছেন কেউ বলেননি’, দরাজ শংসাপত্র তৃণমূল বিধায়কের
আরও পড়ুন। ‘সন্দেশখালি যেন নন্দীগ্রাম!’ JNU-তে আজ পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করবেন সুকান্ত
পার্থ চট্টোপাধ্যায়তকে গ্রেফতারির কয়েকদিনে মাথায় তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেরে সরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর ক্ষেত্রে পরিবারের অনুরোধ আসার পরই তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বালুর গ্রেফতারির পর বারবার তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, 'ষড়যন্ত্র' করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়েছেন পরিবারের কাছ থেকে অনুরোধ পরই।
চার মাস জেলবন্দি বালু
প্রায় চারমাস হতে চলল জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। একাধিক বার জামিন পেয়েও জামিন মেলেনি। রেশন দুর্নীতির তদন্তে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দুর্গাপুজোর সময় তাঁর বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি চলে। তার পর রাতে মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়, মন্ত্রীর বাড়ি থেকে রেশন বণ্টন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র মিলেছে। বালু হাতে মন্ত্রীত্ব না থাকায় তাঁর প্রভাবশালীর তকমা চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আবার তাঁর পরিবার জামিনের জন্য আবেদন করতে পারে।