পঞ্চায়েত ভোটে নজরে বীরভূম জেলা। গরুপাচার মামলায় জেলবন্দি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি না থাকায় ভোটের লড়াইয়ে যে রকমফের হয়েছে তা অনুভব করছেন বিরোধীরা। এর মধ্যে সোমবার প্রায় শতাধিক তৃণমূল কর্মী যোগ দিলেন বিজেপিতে। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে তাঁদের দাবি, তৃণমূলে থেকে কাজ করা যাচ্ছিল না।
'দাপুটে' জেলা সভাপতি না থাকায় দল পরিচালনার জন্য একটি কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন দলনেত্রী। সেই কোর কমিটি জেলায় দল চালানোর বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয়। তার উপর পর্যবেক্ষক হিসাবে রয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে অনুব্রত না থাকায় শাসকদলের দাপট যে অনেকটাই কম একবাক্যে তা স্বীকার করে নিয়েছে বিরোধীরাও। প্রথমদিন থেকেই জেলায় মনোনয়ন জমা দিতে শুরু করেছেন তারা।
মনোনয়নপত্র জমার দ্বিতীয় দিনে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী–সমর্থকদের হাতে প্রহৃত হন বিজেপির লাভপুর ব্লকের সম্পাদক মহাদেব মণ্ডল। জামনা পঞ্চায়েতের গোপীনাথপুরের বুথ সভাপতি গদাধর মোহান্ত, ইন্দাস পঞ্চায়েতের বকুল দাস–সহ ৫ জন বিজেপি কর্মী জখম হন। এ ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। তড়িঘড়ি পথে নামেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা। মাইক নিয়ে নিজের এলাকায় বিরোধীতদের মনোনয়ন দিতে উৎসাহিত করেন।
তবে অনুব্রত না থাকার নমুনা মিলল সোমবার। সিউড়ি-১ ব্লকের কড়িধ্যা এলাকায় একশ তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। এর মধ্যে ছিলেন সিউড়ি-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব চট্টোপাধ্যায়, কড়িধ্যার প্রাক্তন উপপ্রধান উজ্জ্বল সিংহ, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আদিত্য চট্টরাজ, পঞ্চায়েত সদস্য জীবন সরকার, যুবনেতা শুভম সিং-সহ অন্যান্যরা। জেলার অফিসে তাঁদের হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দেন জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা। তাঁদের দাবি, তৃণমূলে থেকে তাঁরা কোনও কাজ করতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা বিজেপিতে যোগদান করেছেন।
তবে শাসকদল এই দলবদলকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাদের দাবি, দলবদলুরা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। এদের দলে নিয়ে বিজেপি আসলে দুর্নীতিকেই মদত দিল।