বাজি কারখানায় বোমা তৈরি হচ্ছে। আর তা থেকে ঘটছে বিস্ফোরণ। তার জেরে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। এই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি বাজি কারখানাতে বিস্ফোরণের ঘটনায়। তাই বিরোধীরা এনআইএ, সিবিআই তদন্তের ধোঁয়া তুলতে শুরু করেছিল। এবার বাজি কারখানাগুলির পরিবেশ ও পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার জন্য ‘বিশেষ দল’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। এই নিয়ে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে বাজি বিষয়ক একটি বৈঠক হয় অফিসারদের। তখনই সিদ্ধান্ত হয়, প্রত্যেকটি জেলায় জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে তোলা হবে। আর সেই পরিকাঠামো দল গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
তাতে ঠিক কী হবে? এই পরিকাঠামো দল সবুজ সংকেত–সহ রিপোর্ট দিলেই সেখানে বাজি তৈরি করার অনুমোদন মিলবে। না হলে সেটা সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, রাজ্য কতগুলি বাজি কারখানা আছে সেটাও তো জানা দরকার। ডাটা তৈরি করা হবে। যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই অ্যাকশন নেওয়া যায়। আগে কারও অনুমোদন থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। এবার ওই দল আবার নতুন করে খতিয়ে দেখবে এবং অনুমোদন দেবে। তবেই সেখানে বাজি তৈরি করা যাবে। আর এই দলের তালিকার বাইরে সব বাজি কারখানা রাজ্য সরকারের খাতায় অবৈধ বলে চিহ্নিত করা হবে। তখন তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই বাজি তৈরির কারখানার অনুমোদন নিয়ে স্পেশাল টিম তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবার কাজ শুরুর পালা। নবান্নের ওই বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব, শ্রম দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, এমএসএমই এবং টেক্সটাইল দফতরের প্রধান সচিব, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা), বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির প্রতিনিধিরা। তাঁরা বিষয়টি মেনে নিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। কারণ অবৈধ বাজি কারখানার কারবারের জন্য তাদেরও হ্যাঁপা পোহাতে হয়। জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়, বিস্তারিত তথ্যভাণ্ডার তৈরি করতে হবে। এমনকী বাজি তৈরি, মজুত ও বিক্রির জন্য জনবহুল এলাকা থেকে দূরে খাস জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারের অফিসের সামনে ধরনায় বসব’, হুঙ্কার মিত্র মদনের
আর কী উদ্যোগ নেওয়া হবে? কেন্দ্রীয় সংস্থা নিরি এবার থেকে সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ দেবে। বাজি তৈরি, মজুত এবং বিক্রির পরিকাঠামো তাঁরাও খতিয়ে দেখবেন। সেখানেও অবশ্য রাজ্য প্রশাসনের প্রতিনিধিরা যুক্ত থাকবেন। সব দিক বিবেচনা করে তবেই এবার থেকে বাজি কারখানার অনুমোদন দেওয়া হবে। দমকল বিভাগের প্রতিনিধি অবশ্যই থাকবে এই কাজে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই বাজি তৈরির জন্য ক্লাস্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার পরিকল্পনাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। আর কিছুদিন পরই রাজ্যজুড়ে দুর্গোৎসব পালিত হবে। তারপর কালীপুজো। তাই এখন থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।