এগরা বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রীই বলেছিলেন বেআইনি বাজি কারখানা রুখতে সক্রিয় হবে তাঁর সরকার। তার পর তিন মাস গড়াতে না গড়াতেই উত্তর ২৪ পরগনার নীলগঞ্জে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে ৭ জনের। স্থানীয়রা চিৎকার করে বলছেন, টাকা তুলত পুলিশ। সব জানত স্থানীয় তৃণমূল নেতা থেকে মন্ত্রী রথীন ঘোষ। এমনকী বেআইনি বাজি কারখানার বিরুদ্ধে সরব হলে ভুয়ো মামলা দিতে জেলে ভরত পুলিশ। বাজি কারখানা রুখতে না পেরে এখন তাদেরই হুমকি দেওয়া শুরু করল তৃণমূল। রবিবার বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নীলগঞ্জ বিস্ফোরণে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে এসে স্থানীয় সাংসদ কাকলি ঘোষ দোস্তিদার বললেন, ‘যারা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ বেআইনি কাজে প্রশাসনের যোগাযোগ নগ্ন হয়ে যাওয়াতেই মরিয়া হয়ে সাংসদের এই আস্ফালন, বলছে বিরোধীরা।
নীলগঞ্জ বিস্ফোরণে দগ্ধদের অন্তত ৮ জন ভর্তি রয়েছেন বারাসত মেডিক্যালে। তাদের মধ্যে অন্তত ৩টি শিশু। রবিবার দুপুরে তাঁদের দেখতে যান সাংসদ চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দোস্তিদার। সেখানে দগ্ধদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ নজর রাখছে। যারা প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অপবাদ ছড়াচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ নজর রেখেছিল বলেই দত্তপুকুরে ১১ লক্ষ টাকার বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।’
কাকলি ঘোষ দোস্তিদারের এই হুঁশিয়ারিকে বিদ্রুপ করছে বিরোধীরা। বাম সাংসদ তথা বরিষ্ঠ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘জনসমর্থন হারিয়ে তৃণমূল এখন স্বৈরাচারের চরমে পৌঁছে গিয়েছে। তাই নিজেদের তো বটেই পুলিশেরও কোনও সমালোচনা সহ্য করতে পারছে না। ভারতের আইনব্যবস্থায় পুলিশের সমালোচনা করলে পদক্ষেপ করার কোনও নিয়ম নেই। তার পরেও যদি ওরা ভুয়ো মামলা দিয়ে কাউকে গ্রেফতার করে আমরা পরের দিন তাঁকে আদালত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসব। আর পুলিশকে অকারণে সমালোচনা করা হয়ে থাকলে তার জবাব পুলিশ দেবে। কাকলি দেবী মন্তব্য করার কে? উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্করবাবু কি বোবা হয়ে গিয়েছেন? যে তাঁর জায়গায় সাংসদকে কথা বলতে হচ্ছে?’