সুন্দরবনের অন্তত ২০টি দ্বীপে পাখি গণনা করা হয়েছিল। গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে এই পাখি সুমারি করা হয়েছিল। আর তাতে যা তথ্য় উঠে এসেছে তা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। সূত্রের খবর, পাখি সুমারির হিসাব অনুসারে গত বারের তুলনায় এবার পাখির সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ভিন দেশ থেকে পাখিরা এসে বাসা বেঁধেছে সুন্দরবনে। নতুন কিছু জায়গাও চিহ্নিত হয়েছে তাদের। কার্গিল, কলিস্তান, বালিরখাল, পিয়ালি সহ একাধিক পয়েন্টে নতুন করে বাসা বেঁধেছিল পরিযায়ী পাখির দল। স্বস্তির কথা হল এবার অন্তত ৮০টি প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে।
এবার দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১৬ হাজার পাখি সুন্দরবনের বিভিন্ন জলাশয়ে, দ্বীপে, জলাশয় সংলগ্ন এলাকায় বাসা বেঁধেছে। আর গত বছরের হিসাবে দেখা গিয়েছে ওই সময় পাখির সংখ্য়া ছিল প্রায় ১২ হাজার। আর সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল কিছু পাখি এই সুন্দরবন এলাকাতেই স্থায়ীভাবে তাদের ঠিকানা বানিয়ে ফেলেছে। পক্ষী বিশেষজ্ঞরা গত কয়েকবছরের পাখির গতিবিধির উপর লক্ষ্য রাখছেন। আর তা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন তারা। তাঁরা দেখছেন একাধিক প্রজাতির পাখি কার্যত সুন্দরবনের প্রেমে পড়ে গিয়েছে। তাদের একাধিক প্রজাতি এই সুন্দরবনেই স্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেছে। মূলত হুইমব্রেল, ইউরেশিয়ান কারলিউ, ও লেসার হুইসলিং ডাক নামে তিনটি বিশেষ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি গত কয়েকবছর ধরে থাকতে শুরু করে দিয়েছে। অর্থাৎ এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে তারা খাপ খাইয়ে নিয়েছে। সেকারণে এই এলাকা ছেড়ে তারা আর নড়তে চাইছে না।এমনকী সুন্দরবনে বংশবিস্তারও করছে তারা। সেই ভিন দেশের পাখির দল এই সুন্দরবনের প্রেমে পড়ে গেল এটা ভাবতেই উল্লসিত পক্ষীপ্রেমীরা।
তবে পরিসংখ্যান বলছে সব মিলিয়ে এবার গতবারের তুলনায় প্রায় ৪ হাজার পরিযায়ী পাখি বেশি রয়েছে সুন্দরবনে।
কী কী প্রজাতির পাখি মূলত পাওয়া যাচ্ছে সুন্দরবনে? রেড নট, গ্রেট নট, বাদামি পাখনা বিশিষ্ট মাছরাঙা, ওপেন বিল স্টর্ক, ব্লু হেডেড গাল, করলিউ স্যান্ড পাইপার, কমন শেলডাক জাতীয় পাখির দেখা মিলেছে সুন্দরবনে। তবে এভাবে পরিযায়ী পাখির সংখ্য়া বৃদ্ধির জেরে স্বাভাবিকভাবে পক্ষীপ্রেমীরা অত্যন্ত খুশি।