রাস্তার চারপাশে ফুলের সারি। তারই মাঝে পায়ে চলা পথ। পাহাড়ি পথে একটু হেঁটে ক্লান্ত লাগছে। পথিকদের বসার জন্যও বিশেষ জায়গা রয়েছে রাস্তার পাশে। ছোট ছোট কাঠের বেঞ্চ। সেখানেই একটু জিরিয়ে নিতে পারেন। এরপর ফের এগিয়ে চলা। চোখ মেললেই কাঞ্চনজঙ্ঘা। ভাবছেন এই অপূর্ব মোহমীয় জায়গার নাম কি ? এই জায়গার নাম রঙ্গারুন। দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৬ কিমি দূরে এই অপূর্ব পাহাড়ি গ্রাম।
কলকাতায় কাঠফাটা রোদ্দুর। মেট্রোর খালি কামরা, কিংবা শপিং মল ছাড়া কিচ্ছু ভালো লাগছে না। প্রচন্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে চলে যেতেই পারেন রঙ্গারুন।
আসলে পাহাড়ের কোলে রঙ্গারুন টি এস্টেট। সেই বাগান ও সংলগ্ন এলাকাকে নিয়ে গড়ে উঠেছে রঙ্গারুন পর্যটন কেন্দ্র। ব্রিটিশ আমলের এই চা বাগান। বর্তমানে এটা ভারতীয় মালিকানাধীনে চলছে।
এই রঙ্গারুনকে অনেকে মেঘের দেশ বলে আখ্যা দেন। বাস্তবিকই এটা মেঘের দেশ। অনেকে বলেন, রঙ্গারুন শব্দটি আসলে একটি লেপচা শব্দ যার নাম বড় নদীর বাঁক। এই জাগয়ার পাশ দিয়েই রংডং নদী বেঁকে গিয়েছে। অনেকে আবার এটি রাইগুরুং বলেও ডাকেন। তবে নামে কী সত্যি কি কিছু এসে যায়! এখানে এলে বুঝবেন রূপ কাকে বলে। প্রায় ৫৯৫০ ফুট উচ্চতায় এই পাহাড়ি গ্রাম। দার্জিলিং শহরের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে এই গ্রাম।
এখানেই রয়েছে রঙ্গারুন টি এস্টেট। ১৮ শতকের চা বাগান ও চায়ের ফ্য়াক্টরি। সঙ্গে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চা থাকলে তাদের নিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে পারেন চা তৈরির নানা ধাপ। এর সঙ্গেই রয়েছে রংডং নদী।
গ্রামে মাঝেই রয়েছে মন্দির। পাহাড়ের কোলে এই মন্দিরের চাতালে বসলেই প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। এখান থেকে দার্জিলিং শহর কাছেই। আবার দার্জিলিংয়ের ঘিঞ্জি ব্যাপারটা এখানে একেবারেই নেই। রাতের বেলা রঙ্গারুন থেকে দার্জিলিং শহর দেখতে অপূর্ব লাগে। মনে হয়ে যেন আলোর মালায় সেজে উঠেছে পাহাড়ের রানী।
এনেজেপি থেকে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করে রঙ্গারুন আসা যায়। অন্যদিকে আপনি প্রয়োজনে দার্জিলিংয়ে একদিন কাটিয়ে ম্যালে, বাতাসিয়া লুপে কাটিয়ে চলে আসতে পারেন রঙ্গারুন। নদী, পাহাড়, ঝরনা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, চা বাগান আর নির্জনতা। দার্জিলিংয়ে বেড়াতে গেলে যা চান সবটাই পাবেন এখানে।
নির্জনে কাটানোর পক্ষে আদর্শ জায়গায়। বর্তমানে একাধিক হোমস্টে তৈরি হয়েছে রঙ্গারুনে। মোটামুটি ১৫০০-১৭০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। আগে থেকে বুক করে চলে যেতে পারেন।