শ্বশুর এখন জেলে। ইডি গ্রেফতার করেছে তাঁকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে। হ্যাঁ, তিনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর তাঁর ভাগ্নি জামাই প্রসন্ন কুমার রায়ের চা–বাগান এবার বন্ধ হয়ে গেল। তার জেরে বিপুল পরিমাণ মানুষের কর্মচ্যুতি ঘটল। কাজ হারালেন তাঁরা। ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের বামনডাঙা চা–বাগানের মালিক ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই প্রসন্ন। এসএসসি দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই জামাই গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয় চা–বাগানে। এবার অবশেষে বছর শেষের মুখে বন্ধই হয়ে গেল বামনডাঙা চা–বাগান। ফলে সমস্যায় পড়লেন শ্রমিকরা।
এদিকে সোমবার রাতেই লকআউট নোটিশ ঝুলিয়ে দেয় বাগান কর্তৃপক্ষ। আর আজ, মঙ্গলবার সকালে কাজে এসে শ্রমিকরা দেখেন নোটিশ ঝোলানো। কাজ নেই। চোখের জল ফেলেন তাঁরা। এই চা–বাগান বন্ধ হওয়ার ফলে এক ধাক্কায় প্রায় ১,৬০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়লেন। তাঁরা চা–বাগানের গেটেই কারখানা খোলার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সম্প্রতি প্রসন্নর গ্রেফতারের পর থেকেই সঠিক সময়ে বেতন হচ্ছিল না। আর আজ ২৭ ডিসেম্বর বন্ধই হয়ে গেল পার্থের জামাইয়ের চা–বাগান।
অন্যদিকে একসময় এই প্রসন্ন রায় রং মিস্ত্রি ছিলেন। পরে রঙের ঠিকাদারি শুরু করেন তিনি। তারপর কপাল খুলে যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্নির সঙ্গে বিয়ে করে। তখন থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বরং আর্থিকভাবে ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করেন প্রসন্ন রায়। এসএসসি দুর্নীতির মিডলম্যান হিসেবে সিবিআই গ্রেফতার করে প্রসন্নকে। তাঁর মাধ্যমেই চাকরিপ্রার্থীরা টাকা পৌঁছে দিত বলে অভিযোগ উঠেছে। এখন বিপদে পড়েছেন শ্রমিকরা।
আর কী জানা যাচ্ছে? জানা গিয়েছে, ডুয়ার্সে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাইয়ের শুধু চা–বাগান নয়, লাটাগুড়ি, জলদাপাড়াতে রিসর্টও আছে। সেখানেও প্রচুর মানুষ কাজ করেন। ‘হেভেন ইন’ ব্র্যান্ড নামে এই রিসর্টগুলি চলে। এসএসসি দুর্নীতির অর্থ দিয়েই এই বিপুল সম্পত্তি করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই বলে অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।