বেশ কিছুদিন ধরেই বন দফতর খবর পাচ্ছিল রাতের অন্ধকারে পাচার বেড়েছে। তারপর থেকে তৎপর হলেও তেমন কিছু তাদের নজরে আসেনি। এরপর দেখতে পাওয়া গেল, সকাল হতেই ক্ষতবিক্ষত জন্তু মরে পড়ে আছে। জঙ্গলের ধারে, ভিতরে এবং বাইরেও দেহ পড়ে থাকতে শুরু করল। এটাই সন্দেহ হয় বন দফতরের কর্মীদের। আর ওই দেহ পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাতি হলে তার দাঁত নেই। বাঘ হলে গায়ে চামড়া নেই। হরিণের দেহ পড়ে থাকলে শিং নেই। এরপরই তদন্তে নেমে পড়ে বন দফতর। আর হাতির দাঁত পাচারের সময় তিনজনকে গ্রেফতার করে।
বন দফতর সূত্রে খবর, শিলিগুড়ির চাম্পাসারি এলাকা থেকে দুটি হাতির দাঁত–সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করেছে আমবাড়ি রেঞ্জের বন–কর্মীরা। গতকাল শুক্রবার গোপন সূত্রে পাচারের খবর পেয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকেন বন দফতরের অফিসাররা। আর ঠিক সময়ে পৌঁছে যায় পাচারের ঠিকানায়। সেখানে ক্রেতা সেজে অভিযানে নামে আমবাড়ি রেঞ্জের বন দফতরের কর্মীরা। সেটা চিনতে পারেনি পাচারকারীরা। একেবারে বমাল ধরা পড়ে যায়। দুটি দুই কেজির হাতির দাঁত–সহ তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের নাম জানানো হয়নি।
এই তিনজন বন্যপ্রাণী হত্যা করত। তারপর তাদের গায়ের চামড়া থেকে শুরু করে দাঁত, নখ, শিং, বের করে নিয়ে দেহ ফেলে চলে যায়। আর সেই শরীরের অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ চড়া দামে বাজারে বিক্রি করে দিত। বিশেষ করে বাইরে পাচার করে দিত। এই গোটা বিষয়ের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য পাচার চক্র জড়িয়ে আছে বলে বন দফতর জানতে পেরেছে। মূল মাথাকে ধরার জন্য এই তিনজনকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণী হত্যা আইনের চোখে অপরাধ। এরা শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত থাকেনি। বরং ওই প্রাণীর অঙ্গ– প্রত্যঙ্গ বেচে দিত বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারের সমবায়ে হানা দিল সিবিআই, তল্লাশিতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
বন দফতর সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে থেকেই এলাকায় পাচার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। তাই এই খবর পেয়ে অপারেশনের ছক সাজানো হয়। তারপর ক্রেতা সেজে অভিযানে নামা হয়। এই অপারেশনে দুই কেজি ওজনের দুটি হাতির দাঁত উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, অসম থেকে এই দাঁত দুটি শিলিগুড়ি হয়ে অন্য রাজ্যে পাচার করার ছক ছিল। আজ, শনিবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি আদালতে পেশ করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে। তারপর মূল মাথার নাগাল পেলে আরও এগোবে বিষয়টি।